টনপ্রতি ৫৪৪ টাকা দিয়েই বন্দর ব্যবহার করবে ভারত

চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ভারতে মালামাল নেওয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলক চালানের ট্রানজিট মাশুল নির্ধারণ করল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শিগগিরই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে তিনটি এবং মোংলা বন্দর দিয়ে একটি পরীক্ষামূলক চালান ভারত থেকে আসবে। পরে সড়কপথ ব্যবহার করে তা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরায় যাবে। প্রতি টনে গড়ে ৫৫৪ টাকা মাশুল নির্ধারণ করেছে এনবিআর।

সম্প্রতি এনবিআর এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আগামী আগস্ট মাসেই পরীক্ষামূলক চালানগুলো নিতে চায় ভারত। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত চিঠি নৌ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

পরীক্ষামূলক চারটি চালান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম ও মোংলা পর্যন্ত সমুদ্রপথে আসবে। পরে চালানগুলো স্থলপথে চট্টগ্রাম-তামাবিল; চট্টগ্রাম-শেওলা; চট্টগ্রাম-বিবিরবাজার ও মোংলা-তামাবিল হয়ে ভারতে প্রবেশ করবে। এসব চালানের বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের জন্য আলাদা আলাদা মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন, টনপ্রতি কনটেইনার স্ক্যানিং মাশুল ২৫৪ টাকা, নিরাপত্তা চার্জ ১০০ টাকা, ডকুমেন্ট প্রসেসিং মাশুল ৩০ টাকা, ট্রানশিপমেন্ট মাশুল ২০ টাকা, এসকর্ট চার্জ ৫০ টাকা, বিবিধ প্রশাসনিক চার্জ ১০০ টাকা—সব মিলিয়ে প্রতি টনে মাশুল দিতে হবে ৫৫৪ টাকা। এ ছাড়া ওই পণ্যের চালানের বাড়তি নিরাপত্তার জন্য যদি বৈদ্যুতিক লক ও সিল ব্যবহার করা হয়, তাহলে খরচ আরও বাড়বে।

এনবিআরের একজন শীর্ষ শুল্ক কর্মকর্তা জানান, কিছুদিন আগে বাংলাদেশ-ভারত শুল্কসংক্রান্ত যৌথ কার্যদলের ১৩তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষামূলক চালানের মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে। পরে নিয়মিত হলে মাশুলের তেমন একটা হেরফের হয় না।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে দুই দেশের মধ্যে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে চুক্তি হয়েছিল। বাংলাদেশের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এ চুক্তিতে সই করে। পরিবহন–সংক্রান্ত চুক্তিটির নাম ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চিটাগাং অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস ফ্রম ইন্ডিয়া (এসিএমপি) ’। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এ চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে, দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে।

এর আগে নৌ প্রটোকলের আওতায় দেশের নৌ ও সড়ক পথ ব্যবহার করে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালে আশুগঞ্জ নৌবন্দর ব্যবহার করে বহুমাত্রিক ট্রানজিট সুবিধা ভারতকে দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তেমন একটা চালান যায়নি।