জুন মাস এলেই আমি পত্রিকার পাতায় আগ্রহ নিয়ে চোখ বোলাই। কোন কোন পণ্য-সেবার দাম বাড়ল আর কোনগুলোর দাম কমল, তা জানতে। তবে গত দুই-তিন বছরে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে চলেছে। কোনো কোনো পণ্যের দাম তো শতগুণ বেড়েছে। এ অবস্থায় আমাদের মতো মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত মানুষেরা কঠিন সময় পার করছেন।
রাষ্ট্রীয় বাজেটের চেয়ে পরিবারের বাজেট কোনো অংশে কম জটিল নয়। সরকারি বাজেটের সমীকরণ অর্থনীতিবিদেরা নানাভাবে মিলিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু পণ্যের দাম বাড়ার কারণে পরিবারের এক খাতের বরাদ্দের অর্থ অন্য খাতে নিয়েও কুল রক্ষা করা যাচ্ছে না। সরাসরি ঘরের বাজার ও রান্নার সঙ্গে যুক্ত থাকায় পরিস্থিতিটা বেশ ভালোভাবেই টের পাচ্ছি।
একজন গৃহিণী হিসেবে আমি মনে করি, জীবনঘনিষ্ঠ জরুরি পণ্য ও সেবার দাম শ্রেণি-পেশানির্বিশেষে সব মানুষের নাগালের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে গ্যাস ও বিদ্যুতের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করব। কারণ, জ্বালানির মূল্য বাড়লে প্রায় সব পণ্য-সেবার দাম বাড়ে। সম্প্রতি ওয়াসার পানির দামও বেড়েছে। সরকার নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখুক, এটাই আমার চাওয়া।
বাজারে পেঁয়াজ, আলু, ভোজ্যতেল, চিনি, আটা ও ডিম, মাছ ও মাংসসহ প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন। নানাভাবে ব্যয় কমিয়েও সংসারের খরচ সামলিয়ে উঠতে পারছি না। তাই এসব পণ্যের সরবরাহ ঠিক করা ও দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
স্বল্প আয়ের পরিবারে যেকোনো সদস্যের অসুস্থতার ব্যয় আমাদের ওপর নতুন করে মানসিক ও আর্থিক চাপ তৈরি করে। এ কারণে সব ধরনের ওষুধের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার দাবি জানাই। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফি নির্ধারণ করে দেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া দেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু করা এখন সময়ের দাবি।
সালমা খাতুন
গৃহিণী, পিসি কালচার হাউজিং, আদাবর, ঢাকা