আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক পেছানোয় পরের কিস্তি পেতে একটু দেরি হবে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে বাংলাদেশের এখন চতুর্থ কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা। বাংলাদেশ আশা করছে, এ কিস্তি পাবে।
নিয়মানুযায়ী, কিস্তি পাওয়ার আগে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের অনুমোদনের দরকার পড়ে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির যে পর্ষদ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা যুক্তরাষ্ট্রে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পিছিয়েছে। বৈঠকটি হবে আগামী ১২ মার্চ। ফলে মার্চের আগে বাংলাদেশ চতুর্থ কিস্তির অর্থ পাচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। এবারও ভয়াবহ তুষারপাত হয়েছে। এ জন্য মার্কিন প্রশাসনকে সতর্কবার্তাও জারি করতে হয়েছে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান প্রায় এক মাস বন্ধ ছিল।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, আইএমএফের পরের কিস্তি পাবে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রে এ বছর বরফগলা এত বেশি হয়েছিল যে আইএমএফের অফিসই বন্ধ ছিল। তাই সংস্থাটি পর্ষদ বৈঠক পিছিয়ে মার্চে নিয়েছে।
দেশে মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) হার বাড়ল, কয়েকটি পণ্যে তা আবার কিছুটা কমল, এর সঙ্গে আইএমএফের পরের কিস্তি পাওয়া, না-পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলে মনে করেন গভর্নর।
অর্থ বিভাগের সূত্রগুলোও বলছে, পরের কিস্তি পাওয়ার আগে যেসব শর্ত পূরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেগুলো পূরণ করছে বাংলাদেশ। রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য বহুমাত্রিক কৌশল অবলম্বন করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে সাত কিস্তিতে আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের একটি ঋণ কর্মসূচি চলমান। এর দুই দিন পরই ঋণের প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে আসে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তিতে ছাড় হয় ১১৫ কোটি ডলার।
তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিশ্রুত ঋণের মধ্য আর বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার। এ দফায়, অর্থাৎ চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। বাকিগুলো পাওয়া যাবে ২০২৬ সাল নাগাদ আরও তিন কিস্তিতে।
বাংলাদেশ অবশ্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির সঙ্গে একটি আলাদা প্যাকেজে সংস্থাটি থেকে আরও ৭৫ কোটি ডলার বাড়তি চেয়েছে। এর বিপরীতে আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছে, বাংলাদেশ সেগুলোও পূরণের পথে রয়েছে বলে জানা গেছে।