প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পুনর্বিনিয়োগ সুবিধা পাবেন না
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয়পত্রে পুনর্বিনিয়োগের সুবিধা পাবেন না। পাবেন শুধু ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরা। এদিকে আন্তর্জাতিক সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরিরত বাংলাদেশি নাবিক (মেরিনার) ও এয়ারওয়েজ কোম্পানিতে চাকরিরত বাংলাদেশি পাইলট ও কেবিন ক্রুরা ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন, যা এত দিন অস্পষ্ট ছিল।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) গত রোববার এ দুটি বিষয় উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর আগে গত ৩ নভেম্বর আইআরডি জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের বিভিন্ন সঞ্চয় পণ্য অর্থাৎ সঞ্চয়পত্র, বন্ড ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের মেয়াদি হিসাবে পুনর্বিনিয়োগ সুবিধা নতুন করে তৈরি করেছে। সাবেক আইআরডি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম অযৌক্তিকভাবে তা আটকে রেখেছিলেন বলে আইআরডি কর্মকর্তারা জানান।
জানা গেছে, ৩ নভেম্বরের প্রজ্ঞাপনের ধারাবাহিকতায় গত রোববারের প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। আগের প্রজ্ঞাপনে বিষয় দুটি স্পষ্ট ছিল না। ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও সঞ্চয় অধিদপ্তরের বিভিন্ন শাখায় গিয়ে ফিরে আসছিলেন তাঁরা।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কোম্পানি ভবিষ্য তহবিলের অর্থ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারে। একইভাবে বিনিয়োগ করতে পারে মৎস্য, পোলট্রি, কৃষি ফার্ম ও অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও। আইআরডির নতুন প্রজ্ঞাপনকে নাবিক, পাইলট ও কেবিন ক্রুরা স্বাগত জানালেও হতাশ ভবিষ্য তহবিলের অর্থ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা প্রতিষ্ঠানগুলো।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাজটি ঠিক হয়নি। পুনর্বিনিয়োগের সুযোগ আইআরডি পুনর্বিবেচনা করবে বলে আশা করি।’
ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের নভেম্বরে তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র—এ তিনটির ক্ষেত্রে মূল বিনিয়োগ করা অর্থের স্বয়ংক্রিয় পুনর্বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের মেয়াদি হিসাবে মুনাফাসহ মূল বিনিয়োগ করা অর্থের পুনর্বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হয়। এ ছাড়া ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডের এক মেয়াদে বিনিয়োগ, দুই মেয়াদে পুনর্বিনিয়োগ, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে এক মেয়াদে বিনিয়োগ ও চার মেয়াদে পুনর্বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়।
সমুদ্রগামী জাহাজ বা এয়ারওয়েজ কোম্পানিতে চাকরিরত অনিবাসী বাংলাদেশি নাবিক (মেরিনার), পাইলট ও কেবিন ক্রুদের জন্য ওয়েজ আর্নার্স বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল আগের সরকার। সেটি চালু করা হয়েছে নতুন করে। তবে বিপত্তি বাধে ‘অনিবাসী’ শব্দটি নিয়ে। এই শব্দ থাকার কারণে তাঁদের কোনো হিসাব খুলছিল না ব্যাংকগুলো। ফলে নাবিক, পাইলট ও কেবিন ক্রুরাও বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারছিলেন না।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সহসভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন কাদরী বলেন, ‘৩ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি হলেও বিনিয়োগ করতে পারছিলাম না। নতুন প্রজ্ঞাপনে “অনিবাসী” শব্দটি বাদ দেওয়ায় এখন সম্ভব হবে। ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়ায় আইআরডিকে ধন্যবাদ জানাই।’