শিক্ষা খাত
শিক্ষা খাতে বরাদ্দ টাকায় বাড়লেও হারে কমেছে
শিক্ষা খাতে যে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, তা জাতীয় বাজেটের ১১.৫৭%। চলতি অর্থবছরের জন্য এই হার ধরা হয়েছিল ১২%।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়লেও, শতকরা হারে তা কিছুটা কমেছে।
শিক্ষাব্যবস্থার দেখভালকারী শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কার্যক্রমের জন্য এবার যে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, তা জাতীয় বাজেটের ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরে ছিল ১২ শতাংশের মতো। অবশ্য শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি খাতের বরাদ্দ যোগ করলে এই হার দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় বাজেটের প্রায় ২০ শতাংশ অর্থ শিক্ষা খাতে বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে অতীতের মতো এবারও দাবিটি পূরণ হয়নি, বরং বরাদ্দের হার কমে ২০ শতাংশ থেকে বেশ দূরেই আছে।
জাতীয় সংসদে গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল আগামী অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার এই বাজেটে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ করা হয়েছিল ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা; অর্থাৎ নতুন বাজেটে টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়ছে ৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেন, এবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দের, যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা চলতি বছরে ছিল ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে খাত বেশি উৎপাদনমুখী, সেই খাতে বরাদ্দের টাকা ব্যয় করতে হবে। বরাদ্দের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। কোনো প্রকল্পের কাজ প্রলম্বিত করা যাবে না। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে হবে।’
কোথায় জোর দিলেন অর্থমন্ত্রী
প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে উপবৃত্তি, পাঠ্যপুস্তকসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, ডিজিটালাইজেশন, স্কুল ফিডিং ইত্যাদি কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের ৩৫টি জেলার ১০৪টি উপজেলায় ১৫ হাজার ৪৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য নেওয়া স্কুল ফিডিং কার্যক্রম সম্প্রতি শেষ হয়েছে। বর্তমানে প্রাইমারি
স্কুল ফিডিং কর্মসূচি (জুলাই ২০২৩-২৬) প্রণয়নের কাজ চলছে।
বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশ ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার জন্য মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, আরও প্রায় ৬৪ হাজার ৯২৫টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও ১২ হাজার ল্যাব স্থাপন করা হবে।