২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ভবিষ্যতে পাঠ্যপুস্তকে পড়ানো হবে, কীভাবে ভালো অর্থনীতি অল্প সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ হলো

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ১৮ মাস আগেও দেশের অর্থনীতি ভালো ছিল। ভবিষ্যতে পাঠ্যপুস্তকে পড়ানো হবে, কীভাবে ভালো অর্থনীতি এত অল্প সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেল।

আজ রোববার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত বাজেটে আলোচনায় সিপিডির মোস্তাফিজুর রহমান এমন মন্তব্য করেন। পল্টনের ইআরএফ কার্যালয়ে সংগঠনটির সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মিরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, অর্থনীতিতে সমস্যা থাকলে প্রথমে দাগ পড়ে। এরপর রক্ত বের হয়। পরে গ্যাংগ্রিন হয়। শেষে গিয়ে অস্ত্রোপচার করতে হয়। তাই অর্থনীতির সমস্যাকে প্রথমেই সমাধান করে ফেলা ভালো।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একজন ব্যবসায়ী বছরে ১০ বার বিজনেস ক্লাসে বিদেশ ভ্রমণ করেন। সারা বছর মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি চালান। কিন্তু তাঁর কর নথিতে আয় দেখলে মনে হবে, তাঁর জন্য একটি সাহায্য সংস্থা দরকার। তাঁর মতে, বিংশ শতাব্দীর প্রতিষ্ঠান দিয়ে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যাবে না। তাই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কার করে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, বাস্তবতার নিরিখে বাজেট প্রণয়ন করা উচিত। কারণ, অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান। আর্থিক খাতও দুর্বল। বাজেটের চাহিদা অনুসারে রাজস্ব আদায় করা যাচ্ছে না, যা সরকারের ঋণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

সভায় বাস্তবতার নিরিখে আগামী বাজেট প্রণয়নের সুপারিশ করেছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, দুর্বল আর্থিক ও রাজস্ব খাত, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ—এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আগামী বাজেটে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, আগামী বাজেট গতানুগতিক নয়, সময়োপযোগী হওয়া উচিত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, আগামী বাজেটে করছাড় কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ নিয়ে তালিকা করছে। এখন বহু খাতে আর করছাড় দরকার নেই। অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো আগামী বাজেটেও গুরুত্ব পাবে। এ ছাড়া ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে আলাপ–আলোচনা চলছে। তিনি আরও বলেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা সব মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে।

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্যোগ নিলেও ১-২ বছর লাগবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসতে। এ ছাড়া এত মূল্যস্ফীতির মধ্যে বার্ষিক সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি আয় হলেই কীভাবে কর দেবে? তিনি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও শুল্ক বিভাগের রপ্তানির দুই রকম তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে পণ্যের এইচএস কোড এক রকম; ঢাকা কাস্টমস হাউসে তা ভিন্ন। এতে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েন।

শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ। তাঁর মতে, সুদের হার বাড়ানোর ফলে বিনিয়োগের অর্থ খরচ বেড়ে গেছে। বেড়েছে পণ্য উৎপাদন খরচও। আবার সুদের হার বাড়ানোর ফলে নতুন বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে। এতে কর্মসংস্থান ব্যাহত হবে।