পরীক্ষামূলক প্রকল্প
এবার গরুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন
প্রথমবারের মতো এ ব্যবস্থা চালু হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ছয়টি পশুর হাটে।
ই-কমার্সে নয়, এবার কোরবানির পশুর হাটেই হবে ডিজিটাল লেনদেন। বিক্রেতারা ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে পশু বিক্রির টাকা গ্রহণ করতে পারবেন। পশু বিক্রির টাকা গ্রহণ করতে তাঁদের হাতে থাকবে পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) যন্ত্র। যার মাধ্যমে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিক্রয়মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন ক্রেতারা। গরু বিক্রির টাকা উত্তোলনে ব্যাপারীদের কোনো মাশুলও গুনতে হবে না।
‘স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট হাট’ নামে পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ছয়টি পশুর হাটে এবার এ লেনদেন সুবিধা চালু করা হচ্ছে। এর ফলে এসব হাটের ক্রেতা ও বিক্রেতাকে টাকা বহনের ঝামেলা পোহাতে হবে না। ডিজিটাল লেনদেনকে জনপ্রিয় করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এবারই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সহযোগিতা করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ডিএনসিসির আওতাভুক্ত গাবতলী, বছিলা, আফতাবনগর, ভাটারা, উত্তরা ও কাওলা পশুর হাটে এ ডিজিটাল লেনদেন বুথ বসানো হবে। বুথগুলো পরিচালনা করবে ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ণ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক ও মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশ।
ক্রেতারা বুথে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, এমএফএস ও মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে কোরবানির পশুর দাম পরিশোধ করতে পারবেন। ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষকে সহায়তা করবে। এর মাধ্যমে পশুর হাটে নগদ টাকার লেনদেনের ঝুঁকি ও জাল টাকা রোধ সম্ভব হবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগামী রবিবার থেকে ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো উল্লেখিত হাটে বুথ বসানোর কার্যক্রম শুরু করবে। প্রাথমিকভাবে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পশু ব্যবসায়ীদের এ কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসতে হিসাব খোলার কাজ করবে। টাকা গ্রহণের জন্য বড় ব্যবসায়ীদের পিওএস মেশিন দেওয়া হবে।
পিওএস মেশিনের মাধ্যমে লেনদেনে ২ শতাংশ মাশুল দেওয়ার বিধান থাকলেও পশু ব্যাপারীদের জন্য সেই মাশুল মওকুফের ব্যবস্থা রাখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া এমএফএসের মাধ্যমে গরুর হাটে লেনদেন করলে টাকা গ্রহণকারী ব্যবসায়ীকে উত্তোলন খরচ দেবে বিকাশ। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আন্তর্জাতিক লেনদেনের নেটওয়ার্ক মাস্টারকার্ড ও ভিসা।
জানতে চাইলে মাস্টারকার্ডের এ দেশীয় ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি পরীক্ষামূলক এ প্রকল্প নিয়ে বেশ আশাবাদী। ভবিষ্যতেও পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেনের বিস্তৃতি ও প্রসারে এ পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
এরই মধ্যে আর্থিক সেবাদানকারী এসব প্রতিষ্ঠান হাট ইজারাদারদের সমন্বয়ে ডিজিটাল বুথ স্থাপনের স্থান চূড়ান্ত করেছে। হাটের ইজারাদারেরাও ডিজিটাল লেনদেনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।