মানহানির মামলা ৭৯ কোটি ডলারে মীমাংসা করল ফক্স

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম কোম্পানি ফক্স করপোরেশন ভোটিং ইকুইপমেন্ট তথা নির্বাচনী সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ডোমিনিয়নের আনা মানহানি মামলা আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি করেছে। এ জন্য ডোমিনিয়নকে ৭৮ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার দিতে রাজি হয়েছে ফক্স।

যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের নির্বাচনে ডোমিনিয়নও ভোট চুরির পরিকল্পনায় জড়িত ছিল বলে খবর প্রচার করেছিল ফক্স। ওই খবরকে মিথ্যা ও অগ্রহণযোগ্য দাবি করে ফক্সের বিরুদ্ধে মামলা করে ডোমিনিয়ন। তাদের অভিযোগ ছিল, ফক্স জেনেশুনেই এ রকম খবর প্রচার করেছিল।

দীর্ঘ বিলম্বের পরে অবশেষে গত মঙ্গলবার সকালে এই মামলার জুরিরা শপথ নেওয়ার পরে এবং উদ্বোধনী বিবৃতি প্রদানের আগে ডোমিনিয়নের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছায় ফক্স।

ফক্স ও ডোমিনিয়ন কোনো পক্ষই অবশ্য ৭৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের বিনিময়ে মামলা নিষ্পত্তি–সংক্রান্ত আর কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। ফক্স তাদের সংবাদ প্রত্যাহার করবে কি না, বা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইবে কি না, এ রকম প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান ডোমিনিয়নের আইনজীবীরা।

মামলাটির বিচারক এরিক ডেভিস মঙ্গলবার বিকেলে দুই পক্ষকে আদালত ত্যাগের অনুমতি প্রদানের আগে আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘উভয় পক্ষ তাদের মামলার সমাধান করেছে।’

এদিকে আদালতের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডোমিনিয়নের আইনজীবী জাস্টিন নেলসন বলেন, ৭৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের সমঝোতা মামলার সত্যতা ও জবাবদিহি প্রমাণ করে। তবে নিষ্পত্তির পরিমাণ মামলায় দাবি করা অর্থের তুলনায় অর্ধেক। মামলায় ডোমিনিয়ন ১৬০ কোটি ডলার দাবি করেছিল।

জাস্টিন নেলসন বলেন, সত্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সত্য লাল, নীল জানে না। মিথ্যার একটা পরিণতি আছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রকে আরও ২৫০ বছর কিংবা তারও চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে টিকিয়ে রাখতে অবশ্যই সত্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে।’

এদিকে ফক্স এক বিবৃতিতে বলে, এই মীমাংসার মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয়েছে যে ফক্স সাংবাদিকতার সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে চলতে সব সময়ই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বিবৃতিতে ফক্স আরও বলে, তীব্র রেষারেষি ও বিভাজনমূলক বিচারের পরিবর্তে আমরা ডোমিনিয়নের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণভাবে বিরোধটির সমাধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এভাবে দেশ সামনে এগিয়ে যাবে।

ডমিনিয়নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জন পুলোস এক সংবাদ সম্মেলনে ফক্সের সঙ্গে মামলা নিষ্পত্তির বন্দোবস্তকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেন। কারণ, ফক্স স্বীকার করেছে যে তারা মিথ্যা বলেছিল। জন পুলোস বলেন, ‘এই পুরো প্রক্রিয়াজুড়ে আমরা জবাবদিহি চেয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমে সত্যভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা অপরিহার্য।’

খবরে বলা হচ্ছে, আদালতের বাইরে সমঝোতা না হলে এই মামলাকে একটি ‘ব্লকবাস্টার মিডিয়া ট্রায়াল’ হিসেবে বিবেচিত হতো। এ জন্য ফক্সের ৯২ বছর বয়সী প্রধান নির্বাহী রুপার্ট মারডকসহ ফক্সের সংবাদকর্মীদের মধ্যে টাকার কার্লসন, শন হ্যানিটি, জিনাইন পিরো ও মারিয়া বার্তিরোমোকেও সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে।