৩০০ কোটি টাকার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশের স্টার্টআপ
দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাসংক্রান্ত স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান শপআপ ৩০০ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা পেয়েছে। ব্যবসা সম্প্রসারণ ও কোম্পানির বিতরণব্যবস্থা শক্তিশালী করতে এ অর্থ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে শপআপ। তাদের আশা, এর মধ্য দিয়ে দেশজুড়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা উপকৃত হবেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঋণের ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে ২০০ কোটি টাকা দেবে বৈশ্বিক অর্থায়ন সংস্থা লেন্ডেবল। এ প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশের উদীয়মান ফিনটেক কোম্পানিতে অর্থায়ন করে। লেন্ডেবল এই প্রথম দক্ষিণ এশিয়ার কোনো কোম্পানিতে অর্থায়ন করল।
বাকি অর্থ দিয়েছে দেশের সিটি ব্যাংক। তারা শপআপকে ১০০ কোটি টাকার ডেট ফাইন্যান্সিং করেছে। যেকোনো দেশীয় স্টার্টআপের জন্য এটা প্রথম।
বাংলাদেশে ৪৫ লাখের বেশি মুদিদোকান আছে, এ কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব মুদিদোকানের মাধ্যমে দেশের প্রায় ৯৮ শতাংশ কেনাবেচা হয়। কিন্তু এই মুদিদোকানিরা নানা রকম সমস্যায় ভোগেন, যার মধ্যে পণ্যের স্বল্পতা, সরবরাহসংকট ও সাশ্রয়ী ঋণের অভাব অন্যতম।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, শপআপের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ‘মোকাম’ এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, ব্র্যান্ড ও কারখানার সঙ্গে চুক্তি করে খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মুদিদোকান পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
শপআপের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ লজিস্টিকস সেবা রেডএক্স, যার মাধ্যমে মুদিদোকানের দোরগোড়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ খাতে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে চায় শপআপ।
এর আগে কোম্পানিটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সংস্থা থেকে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ পেয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। সদ্য পাওয়া ৩০০ কোটি টাকার ঋণ শপআপ বিতরণব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিনিয়োগ করবে এবং বিভিন্ন কারখানা ও খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করবে। এ ছাড়া খাদ্যদ্রব্য বিতরণব্যবস্থায় কর্মরত ছোট উদ্যোক্তাদের ব্যবসা বৃদ্ধি করতে তাঁদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সেবা দেবে।
এ ছাড়া এই অর্থায়ন দিয়ে শপআপ বাংলাদেশের খাদ্য বর্জ্য অপসারণ ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও কাজ করবে। বিজ্ঞপ্তিতে শপআপের সিইও আফিফ জামান বলেন, ‘নতুন অর্থায়ন দিয়ে আমরা এমন এক বিতরণব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যা দেশের আট কোটি মানুষের কাছে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেবে। এ অর্থায়ন আমাদের আর্থিক সক্ষমতার প্রতিফলন এবং ইতিবাচক কাজের পুরস্কার।’
অর্থায়ন সম্পর্কে লেন্ডেবলের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা হানি ইব্রাহীম বলেন, ‘বিগত দিনগুলোতে শপআপের কাজের পরিধি এবং তাদের কর্মীদের দক্ষতা আমাদের মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে শপআপের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরা আনন্দিত। ভবিষ্যতেও আমরা শপআপের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করব, তাদের অগ্রযাত্রায় পাশে থাকব।’