এক কার্গো এলএনজি ও ১০ হাজার টন মসুর ডাল আমদানি হবে

সিঙ্গাপুরভিত্তিক কোম্পানি গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এ সপ্তাহেও এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে কর ও মূল্য সংযোজন করসহ (ভ্যাট) মোট ব্যয় হবে ৬৫৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এক কার্গোতে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার মিলিয়ন মেট্রিক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি থাকে। প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম পড়বে ১৩ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার।

আজ বুধবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির উদ্যোগটি নেয় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিক্রির জন্য ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। প্রতি কেজির দাম পড়বে ৯৬ টাকা ৩৯ পয়সা এবং সরকারের মোট ব্যয় হবে ৯৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে মসুর ডাল সরবরাহের কাজটি পেয়েছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পায়েল ট্রেডার্স।

জানা গেছে, এলএনজি আমদানির আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নেয় আরও দুটি কোম্পানি। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি এলপি ১৪ দশমিক ১৫ ডলার এবং পেট্রোচায়না ইন্টারন্যাশনাল (সিঙ্গাপুর) প্রাইভেট লিমিটেড ১৪ দশমিক ৮৫ ডলার দর উল্লেখ করে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হয় গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড।

বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, শিল্প, সার ও বাণিজ্যিক খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য স্পট মার্কেট থেকে চলতি অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪ কার্গো এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে চলতি মাসে আমদানি করা হবে পাঁচ কার্গো এলএনজি। এ ছাড়া নভেম্বরে পাঁচ কার্গো ও ডিসেম্বরে চার কার্গো এলএনজি।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এলএনজি আমদানির সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ২৩টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমএসপিএ চুক্তি চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার গত ৪ সেপ্টেম্বর সেগুলোই আবার নতুন করে অনুমোদন দেয়। স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির জন্য আগ্রহী বিক্রেতা বা সরবরাহকারীদের তালিকা চেয়ে সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে। ২৯ প্রতিষ্ঠান অংশ নিলে ১৭টির সঙ্গে প্রথম দফায় এমএসপিএ অনুস্বাক্ষর করে। আইনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার (ভেটিং) পর অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পেট্রোবাংলার সঙ্গে এমএসপিএ স্বাক্ষরের অনুমোদন দেয় ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে। পরে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৩টিতে উন্নীত হয়, যা বর্তমানেও আছে।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক এম এস গানভোর এবং ভিটল এশিয়া, জাপানের জেরা, যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি, সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জি গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেশি এলএনজি আমদানি হয়েছে।

গত সপ্তাহেও একই কোম্পানি থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছিল। তখন এক কার্গোর এলএনজিতে প্রতি এমএমবিটিইউর দাম বলা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৫৭ মার্কিন ডলার। আরেক কার্গোতে প্রতি এমএমবিটিইউর দাম ধরা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৭৭ মার্কিন ডলার।