দুর্বল ব্যাংকের সমন্বয়কদের উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ 

  • ইতিমধ্যে পাঁচ ব্যাংকে সমন্বয়ক বসানো হয়েছে। ব্যাংক পাঁচটি হলো এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। 

দেশের বিভিন্ন ‘দুর্বল’ ব্যাংকে দায়িত্ব পাওয়া পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়কদের গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে আসতে বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেছেন, পর্যবেক্ষকদের সাহসী ও উদ্যোগী হয়ে ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে ভূমিকা রাখতে হবে। ব্যাংকগুলোকে ভালো পর্যায়ে নিতে চেষ্টা করতে হবে।

দেশে ব্যাংক রয়েছে ৬১টি। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি ১৪ ব্যাংকে পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক বসিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা এই দায়িত্ব পালন করছেন। তার মানে দেশের এক–চতুর্থাংশ ব্যাংক এখন পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক দিয়ে চলছে। এসব কর্মকর্তার সঙ্গে এক সভায় এই নির্দেশনা দেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ আগ থেকেই অনিয়ম ধরা পড়া ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়ে আসছে। আব্দুর রউফ তালুকদার গত ১২ জুলাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদে যোগ দিয়েই দুর্বল ব্যাংককে পৃথকভাবে তদারকির উদ্যোগ নেন। গত ৩ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ১০টি দুর্বল ব্যাংককে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করা হবে। প্রতিটি ব্যাংকের অগ্রগতি বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যবেক্ষণ করবেন।

তারই পরিপ্রেক্ষিতেই ব্যাংকগুলোতে সমন্বয়ক বসানো শুরু হয়। ইতিমধ্যে পাঁচ ব্যাংকে সমন্বয়ক বসানো হয়েছে। ব্যাংক পাঁচটি হলো এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। আর আগে থেকেই পর্যবেক্ষক দেওয়া আছে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে। নতুন করে অনিয়ম ধরা পড়ায় পর্যবেক্ষক বসেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে। 

জানা গেছে, অনেক পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক সভায় অংশ নিয়ে সম্মানী নিলেও কোনো ভূমিকা রাখছেন না। সভাগুলোতে যেসব অনিয়ম হচ্ছে, তা–ও তুলে ধরছেন না। এমনকি সভা শেষে কেউ কেউ প্রতিবেদনও জমা দিচ্ছেন না। ফলে ব্যাংকগুলোর আর্থিক পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়কদের সঙ্গে সভায় বসেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আরও কয়েকটি ব্যাংক দুর্বল হওয়ার তথ্য পরিদর্শনে ধরা পড়ছে। আগে যেসব ব্যাংকে পর্যবেক্ষক দেওয়া হয়েছে, সেগুলোরও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। ফলে এই মডেল ব্যর্থ হলে পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক বসানো ছাড়া উপায় থাকবে না।