ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দিলেও বাজারে ডলারের তেজ কমেনি। গত সোমবার এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করে প্রতি ডলারের দাম নিয়েছে ১০৮ টাকা।
আর গতকাল মঙ্গলবার খোলাবাজারে ডলারের দাম আবারও ১১৫ টাকায় উঠেছে। রাজধানীর একাধিক মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে ব্যাংকগুলো গতকাল সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা ৮২ পয়সা দামে ডলার সংগ্রহ করে। প্রবাসী আয় ও রপ্তানির অর্থ নগদায়নের ক্ষেত্রে ডলারের এই দাম দেওয়া হয়। গতকাল ন্যাশনাল ব্যাংক প্রবাসী আয় সংগ্রহ ও রপ্তানির অর্থ নগদায়নে প্রতি ডলারের জন্য সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা ৮২ পয়সা ও ইসলামী ব্যাংক ১০৭ টাকা ৪৫ পয়সা দাম দিয়েছে।
ডলার-সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) শীর্ষস্থানীয় নেতারা ১১ সেপ্টেম্বর এক সভায় ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেন। এতে রপ্তানি আয়ে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দাম ৯৯ টাকা, প্রবাসী আয়ে ১০৮ টাকা দাম বেঁধে দেওয়া হয়। আর ডলারের পাঁচ দিনের গড় খরচের চেয়ে এক টাকা বেশি দামে আমদানি দায় শোধ করতে বলা হয় ব্যাংকগুলোকে।
ব্যাংকিং লেনদেনের পাশাপাশি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলোর ডলার কেনাবেচার দামও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঠিক করে দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ব্যাংকগুলোর নগদ ডলার বিক্রির দরের চেয়ে সর্বোচ্চ দেড় টাকা মুনাফা করতে পারবে মানি চেঞ্জারগুলো।
তবে গতকাল অগ্রণী ব্যাংক নগদ ডলার বিক্রি করেছে ১০৭ টাকা, জনতা ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৬ টাকা ৫০ পয়সা দামে। একইভাবে অন্য ব্যাংকগুলো কাছাকাছি দামে ডলার বিক্রি করেছে। ফলে খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকের ডলারের দামে বড় পার্থক্য তৈরি হয়েছে।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জ্বালানিসহ বিভিন্ন আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। সেই তুলনায় বাড়েনি রপ্তানি ও প্রবাসী আয়। ফলে দেশে ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে।
এ জন্য বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ থেকে প্রতিদিন ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত মে মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। সেখান থেকে ধীরে ধীরে তা বাড়িয়ে ৯৬ টাকায় উন্নীত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ব্যাংকগুলোয় ডলার কেনাবেচা হচ্ছে আরও ১২ টাকা বেশি দামে।