নভেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে ২২০ কোটি ডলার
দেশে সদ্য সমাপ্ত নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা দেশি মুদ্রায় প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকার মতো (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। গত বছরের নভেম্বরে দেশে এসেছিল ১৯৩ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়, অর্থাৎ গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে এবার একই সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ।
এর আগে গত অক্টোবরে দেশে ২৩৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছিল, যা ২০২৩ সালের অক্টোবরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। গত সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ডলার ও আগস্টে ২২২ কোটি ডলার প্রবাসী আয় আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী মাসের শেষ তিন দিনেই, অর্থাৎ ২৮–৩০ নভেম্বর প্রবাসী আয় আসে ১৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। গত বছরের জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে মোট ৮৮০ কোটি ৮০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। চলতি বছরে একই সময়ে যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ১১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর মানে চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে প্রবাসী আয়ে প্রায় ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
চলতি ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ ২৫৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় আসে জুন মাসে। সেটিই একক মাস হিসাবে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। এর আগে সর্বোচ্চ আয় এসেছিল ২০২০ সালের জুলাইয়ে, ২৫৯ কোটি ডলার। প্রবাসী আয়সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রবাসী আয় হলো দেশের ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না অথবা কোনো দায় পরিশোধ করতে হয় না। রপ্তানি আয়ে ডলার এলেও কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে ডলার খরচ হয়। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ শোধেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় যত বাড়বে দেশে ডলারের সংকট তত কমবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। দায়িত্ব নিয়েই তিনি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ডলার-সংকট কাটাতে আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে বিদ্যমান ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা। এতে বিনিময় হার নির্ধারণের ক্রলিং পেগ ব্যবস্থায় ডলারের মধ্যবর্তী দাম ১১৭ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত বাড়াতে পারছে ব্যাংকগুলো। প্রণোদনা দিয়ে ব্যাংকগুলো এখন ১২২ টাকায়ও প্রবাসী আয় কিনছে। তবে কোনো কোনো ব্যাংক এর চেয়ে বেশি দাম দিয়েও প্রবাসী আয়ের ডলার কিনছে বলে শোনা যায়।