ব্যাংকের মতো খোলাবাজারেও ডলারের সংকট শুরু হয়েছে। কারণ, প্রবাসীদের দেশে আসা কমেছে এবং বিদেশি পর্যটকদেরও দেশে আসা কমেছে। এই বাস্তবতায় সপ্তাহের শুরুতেও খোলাবাজারে ডলারের দাম ১০০-এর ঘরে ছিল। গত সপ্তাহের শেষে যা ছিল ৯৮-এর ঘরে। গতকাল বুধবার তা ১০২ টাকা ৬০ পয়সা পর্যন্ত উঠেছে। গত চার দিনের ব্যবধানে খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়েছে প্রায় পাঁচ টাকা। বাজারে ডলারের সংকট থাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে দাম।
গতকাল রাজধানীর গুলশান ১ ও ২ নম্বর এলাকার মুদ্রা বিনিময়কারী ১০ থেকে ১২টি প্রতিষ্ঠান ঘুরে জানা গেছে, দিনের শুরুতে ১ ডলারের বিনিময় মূল্য রাখা হচ্ছিল ১০২ টাকার নিচে। দুপুরের আগে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ১০১ টাকা ৮০ পয়সায় ডলার বিক্রি করে। এরপর ক্রেতার সংখ্যা বাড়তে থাকায় দুপুরের পর ডলারের দাম বাড়তে থাকে। গতকাল বেলা তিনটার দিকে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১০২ টাকা ৫০ থেকে ৬০ পয়সায়।
গুলশান ২ নম্বরের খান অ্যান্ড চৌধুরী মানি চেঞ্জারের মালিক হুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাজারে শুধু যে ডলারের সংকট আছে, তা নয়। চাহিদার তুলনায় অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও সিঙ্গাপুরের ডলার, থাইল্যান্ডের বাথ, আরব আমিরাতের দিরহাম ও সৌদি আরবের রিয়ালেরও সংকট আছে। তবে ডলারের চাহিদা বেশি। আজকে ডলার কিনেছি ১০২ টাকা ৩০ থেকে ৪০ পয়সায়। বিক্রি করেছি সর্বোচ্চ ১০২ টাকা ৬০ পয়সায়।’
খোলাবাজারে ডলারের চাহিদা বাড়লে মুদ্রা বিনিময়ের প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত ব্যাংক থেকে ডলার কিনে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করত। কিন্তু এখন ব্যাংকেও ডলারের সংকট। তাতে অনেক ব্যাংক এখন উল্টো খোলাবাজারে ডলার খুঁজছে। গতকাল রাজধানীর গুলশান এলাকায় ব্যবসায়ীরা বিদেশফেরত মানুষদের কাছ থেকে ডলার কিনেছেন ১০২ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৪০ পয়সায়।
গুলশান ১ নম্বরের ঢাকা মানি চেঞ্জার লিমিটেডের পরিচালক শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটা ব্যাংক আমাদের কাছ থেকে ১০ হাজার ডলার নিতে চেয়েছিল। আমরা তার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু আজ (বুধবার) আরেক দফা দাম বাড়ায় এখন এই ব্যাংক আর ডলার নেওয়ায় আগ্রহ দেখাচ্ছে না।’
এদিকে গতকাল অনেক ব্যাংক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম ১০১ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। আর কোনো কোনো ব্যাংক প্রতি ডলারে ১০০ টাকা দিয়েও প্রবাসী আয় পাচ্ছে না।