ডিসেম্বরের ১৪ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১৩৮ কোটি ডলার
চলতি ডিসেম্বরের প্রথম ১৪ দিনে ১৩৮ কোটি ১৩ লাখ ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। এই ১৪ দিনে দৈনিক গড়ে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ৯ কোটি ৮৬ লাখ ৬৯ হাজার ডলার। গত বছরের পুরো ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৯ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার ডলার। গত বছরের ডিসেম্বরে দৈনিক গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ৬ কোটি ৪২ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৩ ডলার। প্রবাসী আয়ের এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে প্রবাসী আয় ২৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন ব্যাংক খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মাসের মধ্যে পুরোনো আমদানি দায় পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে ব্যাংকগুলো ডলারের বেশি দাম দিচ্ছে। এর ফলে আগের চেয়ে বেশি প্রবাসী আয় দেশে আসছে।
প্রবাসী রেমিট্যান্স হাউসগুলো সূত্রে জানা গেছে, এখন বেশির ভাগ ব্যাংক ১২৪ টাকার বেশি দামে প্রবাসী আয়ের ডলার কিনছে। সোনালী এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ডলার কিনেছে ১২৪ টাকা দামে, রিয়া মানি এক্সচেঞ্জ ডলার কিনেছে ১২৪ টাকা ১৮ পয়সা দামে, টেপটেপ সেন্ড ডলার কিনেছে ১২৪ টাকা ৭০ পয়সা দামে ও ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ডলার কিনেছে ১২৫ টাকা ৬০ পয়সা দামে। ফলে এর চেয়ে বেশি দামে দেশের ব্যাংকগুলোকে ডলার কিনতে হচ্ছে। এতে আমদানিকারকদের বেশি দামে দায় শোধ করতে হচ্ছে।
গত আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করে। সেই ধারাবাহিকতায় নভেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে ২২০ কোটি ডলার, যা দেশি মুদ্রায় প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। গত বছরের নভেম্বরে দেশে ১৯৩ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। সেই হিসাবে গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে গত নভেম্বরে প্রবাসী আয় বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। এ ছাড়া গত অক্টোবরে দেশে ২৩৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল, যা গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি। আর গত সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ডলার ও আগস্টে ২২২ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে।
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত গত জুনে সর্বোচ্চ ২৫৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। সেটিই একক মাস হিসেবে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ আয় এসেছিল ২০২০ সালের জুলাইয়ে, যার পরিমাণ ২৫৯ কোটি ডলার।
প্রবাসী আয় হলো দেশের ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না অথবা কোনো দায় পরিশোধ করতে হয় না। রপ্তানি আয়ে ডলার এলেও কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে ডলার খরচ হয়। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ শোধেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় যত বাড়বে, দেশে ডলারের সংকট তত কমবে।