৩৪ নাকি ২৬ বিলিয়ন, রিজার্ভ এখন কত
দেশের রিজার্ভ এ মুহূর্তে কত, তা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। আজ বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নরের দেওয়া এক বক্তব্যের পর এ বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা রিজার্ভ কত, তা জানতে চান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের কাছে। প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ‘বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে যা থাকে, সেটিই হচ্ছে নেট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ।’
গভর্নরের দেওয়া বক্তব্য আমলে নিলে বর্তমানে দেশের প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে রিজার্ভের পরিমাণ দেখানো হচ্ছে ৩৪ বিলিয়নের বেশি।
আজ বুধবার আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, আজ বুধবার দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৪২৫ কোটি ডলার। তবে এ রিজার্ভ থেকে প্রায় ৮০০ কোটি বা ৮ বিলিয়ন (১ বিলিয়নে ১০০ কোটি) ডলার বিভিন্ন খাতে খরচ করা হয়েছে।
রিজার্ভ থেকে ৭০০ কোটি ডলার দিয়ে গঠন করা হয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল বা ইডিএফ। আবার রিজার্ভের অর্থ দিয়ে গঠন করা হয়েছে লং টার্ম ফান্ড (এলটিএফ), গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ)। বাংলাদেশ বিমানকে উড়োজাহাজ কিনতেও রিজার্ভ থেকে সোনালী ব্যাংককে অর্থ দেওয়া হয়েছে। আবার পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের খনন কর্মসূচিতেও রিজার্ভ থেকে অর্থ দেওয়া হয়েছে। এসব খাতে সব মিলিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে ৮০০ কোটি ডলার। ফলে প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাবায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে বলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল। আইএমএফের প্রস্তাবে রিজার্ভের প্রকৃত তথ্য দিতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকও।
আইএমএফ বলেছে, রিজার্ভ থেকে যেসব বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা বাদ দিয়ে রিজার্ভের প্রকৃত হিসাব করতে হবে। কারণ, রিজার্ভের এসব অর্থ চাইলেই ফেরত পাওয়া যাবে না। জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়া বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের (বিআইডিএফ) কোনো প্রকল্পে রিজার্ভ থেকে অর্থায়ন না করতে বলেছে সংস্থাটি।
এখন দেশে প্রতি মাসে আমদানিসহ বিভিন্ন খাতে ৭ বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে। ফলে ২৬ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ৪ মাসের কম সময়ের আমদানি ব্যয় সামাল দেওয়া যাবে।