ব্যাংকে ‘নিয়ন্ত্রণ’ বজায় রাখতে ইউসিবিতে আবার চেয়ারম্যান পরিবর্তন

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে আবার পরিবর্তন আনা হয়েছে। এবার ইউসিবির চেয়ারম্যান করা হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচালক অপরূপ চৌধুরীকে। এর আগে ১৬ আগস্ট ব্যাংকটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল রোকসানা জামান চৌধুরীকে। তিনি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বোন। তাঁর আগে চেয়ারম্যান ছিলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী রুকমিলা জামান।

ব্যাংকটির একটি সূত্র জানিয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ব্যাংকটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্বতন্ত্র পরিচালক অপরূপ চৌধুরী আগে থেকেই ব্যাংকটির সঙ্গে যুক্ত।

এক বিজ্ঞপ্তিতে ইউসিবি জানিয়েছে, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আজ অনুষ্ঠিত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র পরিচালক অপরূপ চৌধুরী। এ ছাড়া নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বশির আহমেদ। অপরূপ চৌধুরী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব। বশির আহমেদ এয়ারমেট গুডি ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, গুডি এক্সেসরিজ (প্রাইভেট) লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর কিছু শেয়ারধারী ব্যাংকের বাইরে বিক্ষোভ করেন। সে সময় ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন করা হয়।

ইউসিবির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর পিতা ও চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী। শুরু থেকে ব্যাংকটির সঙ্গে যুক্ত ছিল ব্যবসায়ী গোষ্ঠী পারটেক্স গ্রুপ। কিন্তু ২০১৭ সালে পারটেক্স গ্রুপের প্রতিনিধিদের ইউসিবি ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন রুকমিলা জামান। তবে রুকমিলা জামান যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় ব্যাংকটি মূলত সাইফুজ্জামান চৌধুরীই পরিচালনা করে আসছিলেন।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো এক চিঠিতে ইউসিবির কিছু শেয়ারধারী অভিযোগ করেন, রুকমিলা জামান ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেও সাইফুজ্জামান চৌধুরী কার্যত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন এবং তাঁর ‘স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের কারণে’ ব্যাংকটি দেউলিয়া হওয়ার পথে। ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে ১ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, যা এই ‘ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা লুট করে পরিশোধ করা হয়েছে’।

ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে অনন্ত গ্রুপ ও পারটেক্স গ্রুপের কয়েকজন প্রতিনিধি সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে দেখা করে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।