বেসরকারি খাতের প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবাল বলেছেন, ‘খেলাপি ঋণের কারণে আমার হার্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ব্যাংকের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রেশার বেড়ে গেছে। এ জন্য সকাল-বিকেল ওষুধ নিতে হচ্ছে। ব্যাংকিং ব্যবসার চেয়ে খারাপ ব্যবসা আর নেই। অসময়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) ফোন পেলেই আমার প্রেশার বেড়ে যায়। তবে প্রিমিয়ার ব্যাংকের খেলাপি ঋণ অন্য ব্যাংকের চেয়ে কম, যা এখন ৩ শতাংশের নিচে।’
প্রিমিয়ার ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ২৩ বছর উদ্যাপন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে খেলাপি ঋণ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবাল এসব কথা বলেন। রাজধানীর গুলশানের হোটেল রেনেসাঁয় আজ বুধবার দুপুরে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় এইচ বি এম ইকবাল বলেন, বাংলাদেশের মতো এত সহজে ব্যাংক থেকে টাকা পাওয়া যায় না। টাকা ফেরত না দিলে তা আদায়ের জন্য ভালো কোনো আইনও নেই। ভারত, দুবাই, থাইল্যান্ড এমনকি পাকিস্তানেও ব্যাংকের টাকা ফেরত না দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘১৯৯৯ সালে আমরা প্রথম বনানীতে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় করি। মতিঝিলের পরিবর্তে কেন বনানীতে প্রধান কার্যালয় নেওয়া হলো, এ জন্য অনেকেই আপত্তি জানিয়েছিলেন। তখন আমি বলেছিলাম, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেই এটা করা হয়েছে। এখন এমন কোনো ব্যাংক নেই, যাদের গুলশান-বনানীতে প্রধান কার্যালয় বা শাখা নেই। তখন অনেক ব্যাংকের ৪০-৪৫ জন পরিচালকও ছিল। আমরা শুরু করেছিলাম ১৩ জন পরিচালক নিয়ে। পরে সর্বোচ্চ ১৩ জন পরিচালক থাকার সুযোগ দিয়ে আইন পাস হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রিমিয়ার ব্যাংকের আর্থিক চিত্র তুলে ধরে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম রিয়াজুল করিম বলেন, গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন সূচকে প্রিমিয়ার ব্যাংকের শতভাগের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। খেলাপি ঋণ ৩ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ঋণ আমানত অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৮০ শতাংশের নিচে, অন্য ব্যাংকের যা ৯৫ শতাংশ। প্রিমিয়ার ব্যাংক এখন গণমানুষের ব্যাংকে পরিণত হওয়ার চেষ্টা করছে।
ব্যাংকটির উপদেষ্টা মুহাম্মদ আলী বলেন, ‘প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৯ লাখ আমানত হিসাব রয়েছে। এসব অর্থ আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে যাচ্ছি। এতে অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালক সংসদ সদস্য বি এইচ হারুন। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।