ব্যাংকব্যবস্থায় একধরনের সংকট চলছে। আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বেশ কয়েকটি ইসলামি ধারার ব্যাংকে যে অনিয়মের তথ্য প্রকাশ হচ্ছে, তাতে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
এ জন্য আমানত কমে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতির কারণেও ব্যাংকব্যবস্থায় মানুষের সঞ্চয় কমে যাচ্ছে। অনেকে জমানো টাকা তুলে নিচ্ছেন। নতুন আমানতও খুব বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পুরো খাতে একধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। ব্যাংকের সূচকগুলো খারাপ হতে শুরু করেছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সবার আগে গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে হবে। পুরো ব্যাংক ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী করতে হবে।
যেসব ব্যাংকে অনিয়ম হয়েছে, তাদের পর্ষদ ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে পরে কেউ অনিয়মের সাহস না করেন। নির্দিষ্ট কারও জন্য পুরো ব্যাংক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতপারে না। ব্যাংক খাত ঝুঁকিতে পড়লে অর্থনীতিও চাপে পড়বে।
আবার ৬/৯ সুদহার বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা বাজার অর্থনীতির সঙ্গেও যায় না। মুদ্রানীতির যে নীতি সুদহার আছে, এসব হারই ঠিক করবে আমানত ও ঋণে ব্যাংকের সুদহার কত হবে।
মুদ্রানীতিই ঠিক করবে পুরো মুদ্রা সরবরাহের কৌশল। সুদহার বেঁধে রাখলে নতুন মুদ্রানীতি কাজে আসবে না। এ জন্য সুদহার একবারেই তুলে না দিলেও বাজারের সঙ্গে সম্পর্কিত করতে হবে। যাতে মানুষ ব্যাংকে টাকা জমা রেখে যা পান, তা দিয়ে মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে পারেন। ব্যাংক আমানত না পেলে ঋণ দেওয়ায় সীমিত হয়ে আসবে। এতে পুরো আর্থিক খাত ক্ষতিতে পড়বে।
মুস্তফা কে মুজেরি, সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ ব্যাংক