সাত দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ৬২ কোটি ডলার
চলতি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রায় ৬২ কোটি মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ১২০ টাকা হিসাবে দেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এনেছে অগ্রণী ব্যাংক, ১০ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ কোটি ৯২ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। এ ছাড়া কৃষি ব্যাংক ৪ কোটি ৫৮ লাখ, সোনালী ব্যাংক ৩ কোটি ৭৯ লাখ ও ন্যাশনাল ব্যাংক ৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এনেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ৭ দিনে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে ১৮ কোটি ৫২ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৮ কোটি ৩৪ লাখ ডলার ও বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে এসেছে ২০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয়।
গত আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করে। সেই ধারাবাহিকতায় নভেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে ২২০ কোটি ডলার, যা দেশি মুদ্রায় প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। গত বছরের নভেম্বরে দেশে এসেছিল ১৯৩ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। সেই হিসাবে গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে গত নভেম্বরে প্রবাসী আয় বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ।
এ ছাড়া গত অক্টোবরে দেশে ২৩৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল, যা গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি। আর গত সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ডলার ও আগস্টে ২২২ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে।
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৫৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে গত জুনে। সেটিই একক মাস হিসাবে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ আয় এসেছিল ২০২০ সালের জুলাইয়ে, যার পরিমাণ ২৫৯ কোটি ডলার।
প্রবাসী আয় হলো দেশের ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না অথবা কোনো দায় পরিশোধ করতে হয় না। রপ্তানি আয়ে ডলার এলেও কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে ডলার খরচ হয়। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ শোধেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় যত বাড়বে, দেশে ডলারের সংকট তত কমবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। দায়িত্ব নিয়েই তিনি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ডলার-সংকট কাটাতে আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে বিদ্যমান ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা। এতে বিনিময় হার নির্ধারণের ক্রলিং পেগ ব্যবস্থায় ডলারের মধ্যবর্তী দাম ১১৭ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত বাড়াতে পারছে ব্যাংকগুলো।