আইআইডিএফসির এমডির পুনর্নিয়োগ আটকে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোম্পানির (আইআইডিএফসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়ার পুনর্নিয়োগ আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি তাঁর সময়ে দেওয়া ঋণের আদায় পরিস্থিতি ও সুদ মওকুফ করা হলে তাতে অনিয়ম হয়েছে কি না বা আমানতকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়েছে কি না, তা জানাতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আইআইডিএফসির চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, আইআইডিএফসির এমডি গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়ার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ মার্চ। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ তাঁকে এমডি পদে পুনর্নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয় অনুমোদনের জন্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানকে জানিয়েছে, এমডি পুনর্নিয়োগ আবেদন বিবেচনা করা গেল না।
চিঠিতে আরও বলা হয়, গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়া এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ করা ঋণ নিয়ম মেনে দেওয়া হয়েছে কি না এবং এসব ঋণ নিয়মিত আদায় হচ্ছে কি না, তা যাচাই করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁর দায়িত্ব পালনকালে কী পরিমাণ সুদ মওকুফ করা হয়েছে, এসব সুদ মওকুফে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, প্রতিষ্ঠান ও আমানতকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়েছে কি না এবং কেউ ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আইআইডিএফসির পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করব।’
গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান। এ জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে হতো। কেউ কেউ বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আর্থিক খাতের নানা বিষয় নিয়ে সোচ্চার থাকায় তিনি কারও কারও রোষানলে পড়েছেন।
পুনর্নিয়োগ আটকে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়া কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আইআইডিএফসি হলো সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও বিমাপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে গঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এতে সরকারি খাতের সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) শেয়ার রয়েছে ২৩ শতাংশ। ৮ বেসরকারি ব্যাংক ও ৩ বেসরকারি বিমা এবং সাবেক অর্থসচিব মতিউল ইসলামের শেয়ার রয়েছে ৭৭ শতাংশ। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে আইআইডিএফসির খেলাপি ঋণ ছিল ৬১১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৫৯ শতাংশ।