পদত্যাগ করেছেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এএমডি মোস্তফা খায়ের

মো. মোস্তফা খায়ের

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের (এফএসআইবি) অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) মো. মোস্তফা খায়ের পদত্যাগ করেছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ২০০৬ সাল থেকে ব্যাংকটিতে কর্মরত এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। পদত্যাগের পর ব্যাংকটির কর্মীদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এফএসআইবির চেয়ারম্যান ছিলেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী সরকারের পতনের পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদকে এস আলম গ্রুপের হাত থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তার আগেই ব্যাংকের অর্ধেকের বেশি টাকা এস আলম বিভিন্ন নামে বের করে নিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়েছে ব্যাংকটি।

কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্নভাবে এফএসআইবি থেকে যে টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে, সেই টাকা ফেরত আসছে না। ফলে ব্যাংকটি তারল্যসংকটে ভুগছে এবং গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ব্যাংকের এই পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করলেন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা খায়ের।

পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে মোস্তফা খায়ের প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যাংক গ্রাহকের টাকাপয়সা দিতে পারছি না। আমার অনেক আত্মীয়স্বজন এই ব্যাংকে টাকা রেখেছিল, তাদের টাকাও ফেরত দিতে পারছিলাম না। ফলে কাজ করতে আর ভালো লাগছিল না। এ জন্য পদত্যাগ করেছি।’

যখন ব্যাংকে লুটপাট হয়েছিল, তখন মোস্তফা খায়েরের ভূমিকা কী ছিল, তা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তখন প্রতিবাদ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। সবকিছুই তাদের পক্ষে কাজ করেছে। আমরা চাকরি করে আর কী করতে পারতাম।’

ব্যাংকের কর্মীদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে মোস্তফা খায়ের বলেছেন, ‘আমি আনুষ্ঠানিকভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে পদত্যাগ করছি, যা ৪ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে। আপনাদের প্রত্যেকের সঙ্গে কাজ করা একটি অমূল্য অভিজ্ঞতা। আপনাদের যে সমর্থন, সহযোগিতা ও সাহচর্য পেয়েছি, তার জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আমাদের একসঙ্গে থাকা স্মৃতি ও শিক্ষাগুলো দীর্ঘকাল আমার সঙ্গে থাকবে।’

মোস্তফা খায়ের ২০১১ সালে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ২০১৫ সালে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০২০ সালের জুনে তিনি ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। তিনি ব্যাংকটির ধানমন্ডি শাখা, বনানী শাখা ও গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক এবং প্রধান কার্যালয়ের মার্কেটিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।