এবার ইসলামী ব্যাংক ছাড়ছে বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার
ইসলামী ব্যাংকের আরেক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার তাদের হাতে থাকা ব্যাংকটির সব শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রতিষ্ঠানটি শেয়ার বিক্রির এ ঘোষণা দিয়েছে।
ঘোষণায় বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির হাতে ইসলামী ব্যাংকের ৩৪ লাখ শেয়ার রয়েছে। গতকালের বাজারমূল্যে যার দাম প্রায় ১১ কোটি টাকা। এর আগে ব্যাংকটির দেশি-বিদেশি বেশ কিছু উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রি করে ব্যাংকটি ছেড়ে গেছে।
এদিকে বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার জানিয়েছে, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন করা হবে। তবে ডিএসইর তথ্য বলছে, গতকালই ব্লক মার্কেটে ইসলামী ব্যাংকের ৩৪ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়ে গেছে। অর্থাৎ আগে থেকেই বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারের ধারণ করা ইসলামী ব্যাংকের এই শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত হয়েছিল। গতকাল তা আনুষ্ঠানিকভাবে হাতবদল হয়েছে। ব্লক মার্কেটে শেয়ারের ক্রেতা-বিক্রেতা ও দাম আগে থেকেই নির্ধারণ করা থাকে। শুধু আনুষ্ঠানিক হাতবদলের কাজটি হয় সেখানে।
গত বছরের অক্টোবরে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের মালিকানা ও পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়ায় সৌদি আরবভিত্তিক ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)। ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুক্ত ছিল আন্তর্জাতিক ঋণদাতা এই সংস্থা। আইডিবির পক্ষে সর্বশেষ ব্যাংকটিতে পরিচালক ছিলেন মোহাম্মদ আল-মিদানী। আইডিবি তাদের হাতে থাকা ইসলামী ব্যাংকের সব শেয়ারও ছেড়ে দেয়।
১৯৮৩ সালে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াত-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই ২০১১ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটি পরিচালনায় যুক্ত ছিল। ২০১৭ সালে একাধিক কোম্পানির নামে ২ শতাংশ করে শেয়ার কিনে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। গ্রুপটির চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম এখন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান।
এরপর দেশি ও বিদেশি শেয়ারধারীরা একে একে ব্যাংকটি ছেড়ে চলে যেতে থাকেন। ২০১৭ সালের এপ্রিলে সব শেয়ার বিক্রি করে দেয় স্থানীয় উদ্যোক্তা ইবনে সিনা ট্রাস্ট। এরপর ওই বছরের মে মাসে কিছু শেয়ার বিক্রি করে দেয় আইডিবি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যাংকটির শেয়ার ছেড়ে দেয় কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস।
গত বছরের জুনে শেয়ার ও পরিচালক পদ ছাড়ে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। গত জুলাইয়ে শেয়ার ও পরিচালক পদ ছাড়ে সৌদি আরবের আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিস্ট এজেন্সি। এখন ব্যাংকটিতে একজন বিদেশি পরিচালক রয়েছেন। বাকি ব্যক্তিরা এস আলম গ্রুপ–সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি।