বিশ্বের মানুষের প্রধান চাওয়া ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের অবসান
বর্তমানে বিশ্বের মানুষের প্রধান চাওয়া হলো ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের অবসান এবং স্বাস্থ্যকর জীবনের নিশ্চয়তা। জাতিসংঘের ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ নিয়ে সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ও বৈশ্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান ইপসস পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী জনগণের শীর্ষস্থানীয় তিনটি অগ্রাধিকার হলো ‘শূন্য ক্ষুধা’, ‘দারিদ্র্যহীন’ এবং ‘সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা’।
২০টি দেশের ২০ হাজার মানুষের মধ্যে এই জরিপ চালিয়েছে ইপসস ও দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। দেখা গেছে, শীর্ষ তিনটি অগ্রাধিকার সম্পর্কে সর্বমত একই।
২০১৫ সালে জাতিসংঘ ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচন, বিশ্ব রক্ষা এবং একটি নতুন টেকসই উন্নয়নের এজেন্ডা হিসেবে সবার জন্য সমৃদ্ধি নিশ্চিতে ১৭টি লক্ষ্য ও ১৬৯টি সহায়ক লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করে। সরকার, বেসরকারি খাত, নাগরিক সমাজ এবং নাগরিকদের সবার জন্য আরও ভালো ও টেকসই ভবিষ্যৎ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অগ্রাধিকারের দিক থেকে ইপসস ২৮টি দেশের ২০ হাজার প্রাপ্তবয়স্ককে নির্বাচিত ১৬টি লক্ষ্যের মধ্যে প্রাধান্য নির্ধারণ করতে বলে। শীর্ষস্থানীয় অগ্রাধিকারের বিষয়টি যখন আসে, তখন জরিপে বিশ্বের সব অঞ্চলের নাগরিকদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ঐকমত্য দেখা যায়। সেগুলো হলো—
১. শূন্য ক্ষুধা—এসডিজি অর্জনে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে অগ্রাধিকার হিসেবে দেখা হয়েছে। ২৮টি দেশের মধ্যে ২০টি দেশের তালিকায় এই লক্ষ্য শীর্ষে রয়েছে। বাকি ৬টি দেশের ক্ষেত্রে প্রথম তিনটি প্রাধান্যের মধ্যে এটি একটি।
২. দারিদ্র্যহীন—বিশ্বব্যাপী অগ্রাধিকারের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। ৪টি দেশ একে প্রাধান্যের ক্ষেত্রে প্রথমে রেখেছে। ২০টি দেশ প্রথম তিনটি প্রাধান্যের মধ্যে এটিকে রেখেছে।
৩. সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থতা—বিশ্বব্যাপী ৩ নম্বর অগ্রাধিকার। ৪টি দেশে এটিকে ১ নম্বর অগ্রাধিকার দিয়েছে। এ ছাড়া ১৩টি দেশের শীর্ষ তিন অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে এটি।
অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা পরের তিনটি বিষয় হলো পরিষ্কার জল এবং স্যানিটেশন, শোভন কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং গুণগত শিক্ষা। এ ছাড়া জরিপে দেখা গেছে ২৮টি দেশের মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধান অগ্রাধিকার জলবায়ু মোকাবিলায় পদক্ষেপে, দক্ষিণ কোরিয়ার অগ্রাধিকার ‘শান্তি, ন্যায়বিচার ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান’। বেলজিয়ামের প্রধান অগ্রাধিকার বৈষম্য দূরীকরণ ও ভারতের লিঙ্গসমতা।
জরিপে যে উল্লেখযোগ্য বিষয় উঠে এসেছে, তা হলো লক্ষ্য নির্ধারণ হলেও জনগণ মনে করে যে ২০৩০ সালকে সামনে রেখে সরকারগুলো এসব বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না।