বাস্তবতা কিছুটা অনুধাবন করতে পেরেছে সরকার
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে চলছে বিধিনিষেধ। দেশের বেশির ভাগ অফিস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তাঁদের সহযোগিতার জন্য ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার বিশেষ পাঁচটি প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান।
গবেষণা করে আমরা নতুন দরিদ্রের কথা বলেছিলাম। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তা জনসমক্ষে গ্রহণ করেননি। তা সত্ত্বেও নতুন পাঁচ প্যাকেজ ঘোষণার মাধ্যমে এটিই মনে হচ্ছে যে বাস্তবতা কিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পেরেছে সরকার। নিঃসন্দেহে নতুন পাঁচ প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণাকে আমি প্রয়োজনীয় ও ইতিবাচকই বলব।
দরিদ্রদের যথাযথ তালিকা সরকার তৈরি করতে পারেনি। এ দায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)। ২০১৬ সালের পর থেকে সংস্থাটি এ ব্যাপারে তেমন কিছু করেনি। অথচ কোভিড-১৯-এর অভিঘাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠী যে বেড়েছে, অনেক গবেষণাতেই তা উঠে এসেছে।
তবে তালিকার অভাবে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। মুশকিল হচ্ছে শহরের দরিদ্রদের নিয়ে। তাদের কাছে কিছুই পৌঁছায় না। তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর ভালো কোনো পদ্ধতিও নেই। একটি ভালো উপায় হতে পারে এলাকাভিত্তিক ও পেশাভিত্তিক জনগোষ্ঠীকে বেছে নেওয়া। সরকার এটা নিয়ে গভীরভাবে ভাবুক। শুচিবায়ুগ্রস্ত না থেকে এনজিওগুলোকেও এ ব্যাপারে কাজে লাগাতে পারে সরকার। ঋণ বিতরণের কাজেও এনজিওগুলোকে লাগানো যায়।
গ্রামে অনেক কর্মসূচি আছে। আরও ভালোভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করার সুযোগ আছে। জানা গেল, ঈদের পরে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম (ওএমএস) চালু করা হবে। এটা ঠিক আছে। তবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্যক্রমকে আরও জোরালো করা যায়। টিসিবির ট্রাক থেকে শহরের অনেক মধ্যবিত্তও পণ্য কেনেন।
দরিদ্র মানুষেরা তো বিপদে আছেই। এখন তো মধ্যবিত্তরাও বড় বিপদে। অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। নিরুপায় হয়ে অনেকে ঢাকা ছেড়ে গেছেন এবং যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা খুব ভালো লক্ষণ নয়। শেষ কথা বলতে পারি, নতুন করে যে পাঁচ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, এগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নে সরকারকে মনোযোগী হতে হবে।