ব্যবসায়ীদের নতুন করে ব্যাংক করার কোনো যৌক্তিকতা আমি দেখি না। দেশে এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই আমি মনে করি, ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে ১০টায় আনা উচিত। যাঁরা এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি, তাঁদের নিজেদেরই ব্যাংক আছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসে (বিএবি) যাঁরা আছেন, তাঁরা আবার এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গেও জড়িত।
এফবিসিসিআইয়ের কাজ হলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করা। যেসব খাতে ঋণ যায় না বা কম যায়, সেসব খাতে ঋণের ব্যবস্থা করা এফবিসিসিআইয়ের অন্যতম কাজ। তাদের ফোকাস করা উচিত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনায়। দাবি আদায়ে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করা। ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় নানা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করবে সংগঠনটি। ব্যাংক করা তাদের কাজ নয়।
এফবিসিসিআই ব্যাংক করার জন্য যুক্তি দেখায় সীমান্ত ব্যাংক আছে, ট্রাস্ট ব্যাংক আছে। পুলিশের ব্যাংক আছে, বিজিবির ব্যাংক আছে। আমাদের কেন ব্যাংক থাকবে না। আমার মতে, এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না। আগে যাদের ব্যাংক দেওয়া হয়েছে, সেটা দেওয়া উচিত হয়নি। এখন খারাপ হয়েছে, তাই বলে আরেকটি খারাপ কাজ করতে দেওয়া যায় না।
এফবিসিসিআইয়ের মনোযোগ দেওয়া উচিত তাদের সদস্যদের সমস্যা সমাধানে। সদস্যদের অনেকে পর্যাপ্ত ঋণ পান না। সে জন্য তারা সরকারের কাছে তদবির করতে পারে। চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আবার নানা সমস্যার কারণে অনেক ব্যবসায়ী অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতির মুখে পড়েন। তাঁরা যাতে ব্যবসা থেকে হারিয়ে না যান, সে জন্য কাজ করা উচিত এফবিসিসিআইয়ের।
বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে একমাত্র মেট্রো চেম্বারে রাজনীতির বাইরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচিত হয়। আর কোনো ব্যবসায়িক সংগঠনে সেটি হয় না। এবার শুধু বিজিএমইএতে একটু প্রতিযোগিতা হয়েছিল। অন্যবার তা-ও হয় না। এটা খুবই দুঃখজনক। একটা নির্বাচিত কমিটি এই ধরনের সংগঠন চালাবে, এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। তারা যারাই হোক, সরকারকে তাদের সমস্যার কথা বলবে। তাদের সদস্যদের জন্য কাজ করবে। সরকার যদি নেতা ঠিক করে দেয়, তারা তখন সরকারের অনুগত থাকবে। সদস্যদের স্বার্থ তারা দেখবে না। ভোট ছাড়া নেতা নির্বাচন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।