প্রথম আলো: এ বছর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কেমন ছিল?
শাহীন আহমেদ: শুরুতে এক কোটি চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তবতায় লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯০ লাখে নির্ধারণ করেছি, যা গত বছরের কাছাকাছি। গত শুক্রবার পর্যন্ত আমরা চার লাখ চামড়া সংগ্রহ করতে পেরেছি। এখন থেকে আগামী তিন মাস চামড়া সংগ্রহ করা হবে। তাতে লক্ষ্যের কাছাকাছি যেতে পারব বলে আশা করছি।
প্রথম আলো: বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে চামড়াশিল্পের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়েছে?
শাহীন আহমেদ: ঋণপত্র (এলসি) খোলা
নিয়ে ট্যানারির ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের সমস্যায় রয়েছেন। চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের রাসায়নিক আমদানির জন্য অনেকেই প্রয়োজনীয় ঋণপত্র খুলতে পারেননি। রাসায়নিক আমদানি প্রায়
৪০ শতাংশ কমেছে। এর একটি বড় প্রভাব পড়বে চামড়া উৎপাদনে।
প্রথম আলো: ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রপ্তানি আয় কি বাড়বে?
শাহীন আহমেদ: ডলারের যে দাম বেড়েছে, তার বড় প্রভাব রপ্তানি আয়ে পড়বে না। কারণ, বৈশ্বিক বাজারে কাঁচামাল ও রাসায়নিকের দাম অনেক বেড়েছে। এগুলো আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের দাম বেশি লাগছে। অর্থাৎ ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রপ্তানি আয় বাড়লেও তা আবার আমদানির ক্ষেত্রে চলে যায়।
প্রথম আলো: দীর্ঘদিন ধরে আড়তদারদের কাছ থেকে চামড়া কিনে আসছেন ট্যানারির মালিকেরা। কিন্তু এখন ট্যানারির মালিকেরা সরাসরি চামড়া কেনায় নেমেছেন। কেন?
শাহীন আহমেদ: দুই–তিন বছর আগেও আমরা তেমন কাঁচা চামড়া কিনতাম না। কিন্তু দেখা গেছে যে মধ্যস্বত্বভোগীরা কাঁচা চামড়ায় ৩০০ টাকার বেশি মুনাফা করেন, যার প্রভাব পড়ে বাজারে। এ জন্য বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্যানারির মালিকেরা কাঁচা চামড়া কেনায় আগ্রহী হয়েছেন। আমরা এখন সরাসরি মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোতে আগে থেকেই যোগাযোগ করি। পরে তাদের বাজারমূল্য অনুসারে চামড়ার দাম দিই।
প্রথম আলো: ছাগলের চামড়ার দাম এত কম কেন?
শাহীন আহমেদ: হাজারীবাগে ছাগলের চামড়া প্রক্রিয়ার জন্য প্রায় ২০টি ট্যানারি ছিল। এর মধ্যে ১৫টিই এখন বন্ধ। ফলে কোরবানির সব ছাগলের চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের সক্ষমতা বাকি পাঁচ ট্যানারির নেই। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে বিলাসী পণ্য হিসেবে ছাগলের চামড়ার ব্যবহার কমছে। এর নেতিবাচক প্রভাবই পড়েছে এখন।