স্মরণ
বিনিয়োগ-কর্মসংস্থানে বেশি গুরুত্ব দিতেন ফজলুর রহমান
৭৬ বছর বয়সে মারা গেছেন সিটি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান। দেশের যেসব উদ্যোক্তা সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা ও উদ্যোগে শূন্য থেকে বড় শিল্পোদ্যোক্তা হয়েছেন, তিনি তাঁদের একজন। মাত্র ৪২ টাকা পুঁজিতে একটি মুদিদোকান খুলে ব্যবসাজীবন শুরু করেন। তাঁর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪০টি। কাজ করেন ৩০ হাজার মানুষ।
সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই সমবেদনা। অসাধারণ একজন উদ্যোক্তা ও বিরাট ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন তিনি। উদার মানসিকতাসম্পন্ন মানুষ ও নিপাট ভদ্রলোক বলতে যা বোঝায়, তার উদাহরণ ছিলেন উনি। সংগ্রামী জীবন ছিল তাঁর। তাই পরিশ্রমী ছিলেন। এ জন্য অসম্ভব সফলতা পেয়েছেন।
ফজলুর রহমান একের পর এক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। বেশ কয়েকটি কারখানার কাজ এখনো চলমান। আমার জানামতে, চার-পাঁচটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কাজ বেশ এগিয়ে এনেছিলেন।
এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে গিয়ে দেশি-বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। তবে ব্যাংকের জন্য সব সময় তিনি খুব ভালো গ্রাহক ছিলেন। ব্যাংক খাতে ওনার মতো নিয়মিত গ্রাহকের সংখ্যা কমই আছে বলতে হবে।
তিনি ব্যবসাটা হৃদয় দিয়ে বুঝতেন। সেভাবেই নিজের হাতে প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তুলেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্ত করতে দেশীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নানা পদে বসিয়েছেন। বিদেশিদেরও নিয়ে এসেছেন। যাঁর পরামর্শ পেলে প্রতিষ্ঠান ভালোভাবে চলবে, প্রয়োজনে তাঁর পরামর্শ নিয়েছেন। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে বেশি গুরুত্ব দিতেন। তবে সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি ভুলে যাননি। পুরান ঢাকার মানুষের জন্য চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ তারই বহিঃপ্রকাশ।
উদ্যোক্তা হিসেবে সফলতার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য পরের প্রজন্মের হাত ধরে এগিয়ে নিতে উত্তরাধিকার তৈরিতেও গুরুত্ব দিয়েছেন। যেটা একজন প্রকৃত ব্যবসায়ীর পরিচয় বহন করে। আমি আশা করি, উত্তরাধিকাররা ওনার সব ব্যবসা-বাণিজ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে সক্ষম হবেন এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও বড় করে তুলবেন।
সেলিম আর এফ হোসেন, এমডি, ব্র্যাক ব্যাংক