৫০ হাজার এসএমই উদ্যোক্তাকে ঋণ দিয়েছে সিটি ব্যাংক
বিশ্ব এমএসএমই দিবস আজ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে ঋণ প্রদানে। তারপরও অর্থায়নই প্রধান সমস্যা খাতটির। এমএসএমই দিবস সামনে রেখে এই আয়োজন
দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশই কটেজ, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প খাতের। দেশের নিবন্ধিত ব্যবসার প্রায় ৯৭ শতাংশ সিএমএসএমই খাতের। জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় এক–চতুর্থাংশ এ খাত থেকে আসে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাহক হিসেবে কাজ করছে এই খাত।
এ খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অর্থায়ন–সুবিধা এবং পর্যাপ্ত মূলধনের জোগান। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যতম সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। বর্তমানে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সিএমএসএমই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সিটি ব্যাংক বর্তমানে ১৩৬টি শাখা, ৪৬টি উপশাখা, ৫০৩টি এজেন্ট আউটলেট এবং ৩৪টি এসএমই ইউনিট কার্যালয়ের মাধ্যমে প্রায় ৫০ হাজার এসএমই ব্যবসায়ীদের ঋণসুবিধা দিয়েছে। যার ৭৫ শতাংশই গ্রামাঞ্চল ও উপশহরকেন্দ্রিক।
করোনা মহামারিতে, বিশেষ করে করোনার বিধিনিষেধ চলাকালে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন। সেখান থেকে অনেকের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা ছিল খুবই ক্ষীণ; কিন্তু সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছে। করোনার পর থেকে এ খাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। বর্তমানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণেও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছেন।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারভিত্তিক সুদহার চালু করেছে। ঋণের সুদ বেশি হলে এসএমই উদ্যোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচিত তাদের ব্যবসার পরিচালন খরচ কমিয়ে ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে সিটি ব্যাংক এ খাতে সুদের হার সহনীয় পর্যায়ে রাখবে।
এদিকে ব্যাংকঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথিপত্র দিতে পারেন না অনেক উদ্যোক্তা। এই সমস্যা সমাধানে একটি কেন্দ্রীভূত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যেতে পারে। যেখানে উদ্যোক্তারা সহজেই তাদের ব্যবসার তথ্য সংরক্ষণ করতে পারবেন। এ ছাড়া নথিপত্রের গুরুত্ব ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
বাংলাদেশের ছোট ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো মূলত দেশের চাহিদা পূরণ করে থাকে। গার্মেন্ট, চামড়াশিল্প, হিমায়িত খাদ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাত ছাড়াও অনেক খাত রয়েছে, যেখানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অনেক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসার উন্নয়নে ব্যাংকঋণের বিকল্প নেই। এই খাতে অর্থায়নের জন্য ব্যাংকের তদারকি ও ঋণ আদায়ের সক্ষমতা বৃদ্ধিও জরুরি। এ খাতের কিছু উদ্যোক্তা ব্যাংকঋণ পরিশোধে সমস্যায় পড়েন ব্যাংকের তদারকির অভাবে। তবে উদ্যোক্তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, ঋণ আদায়ে সঠিক তদারকি ও নীতিসহায়তার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
কামরুল মেহেদী
হেড অব প্রোডাক্ট, স্মল অ্যান্ড মাইক্রো ফাইন্যান্স বিভাগ, দ্য সিটি ব্যাংক