কোভিডকালীন সহায়তার মেয়াদ বাড়ানো দরকার
বিশ্ব এমএসএমই দিবস আজ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে ঋণ প্রদানে। তারপরও অর্থায়নই প্রধান সমস্যা খাতটির। এমএসএমই দিবস সামনে রেখে এই আয়োজন
দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) এসএমই খাতের অবদান ২৭ শতাংশ; কিন্তু দেখা যাচ্ছে, দেশে মোট যত ঋণ দেওয়া হয়েছে, তার মাত্র ১০ ভাগ এসএমই খাতে পেয়েছে। অর্থাৎ এই খাত জিডিপিতে যতটুকু অবদান রাখছে, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে তার চেয়েও অনেক পিছিয়ে আছে।
জিডিপিতে অবদানের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের এসএমই খাত পিছিয়ে। যেমন পাকিস্তানের জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান ৪০ শতাংশ; যা ভারতে ৩০ শতাংশ ও চীনে ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ অপর্যাপ্ত সহায়তা।
ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যান্য খাতের মতো এসএমই খাতের জন্যও সবচেয়ে বেশি দরকার হলো অর্থায়ন। দেশে অর্থায়নের সবচেয়ে বড় উৎস ব্যাংক ঋণ। অন্যান্য উৎস থেকে এখন কিছুটা অর্থায়ন হলেও ব্যাংকের ওপর নির্ভরতা অনেক বেশি। সেটা কমানো দরকার। তবে সরকার এসএমই খাতকে সহায়তা করতে নানারকম চেষ্টা করে যাচ্ছে।
সরকার কোভিড মহামারির সময় এসএমই খাতকে দিতে ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছিল। এটি যথেষ্ট ছিল না; তার পরও ওই সময় এই প্রণোদনা কাজে লেগেছিল। কিন্তু এই খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। অর্থাৎ এই খাতের উদ্যোক্তারা এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। এই বাস্তবতায় কোভিডকালীন সেই সহায়তার মেয়াদ বাড়ানো হলে উদ্যোক্তারা লাভবান হবেন।
এটা তো অর্থায়নের দিক, তার সঙ্গে আছে উৎপাদন, বিপণন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়। এসব বিষয়ে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব সহায়ক কর্মসূচি আছে, সেগুলো সম্পর্কেও তাঁদের অবহিত করা দরকার। এসব সহায়তা পেতে কী কী করা দরকার, সেই বিষয়ে উদ্যোক্তারা প্রশিক্ষণ পেলে তাঁদের সুবিধা হবে।
খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের বিষয়। সে জন্য এই ঋণ যেন যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা যারা ঋণ দিই, তারা এক ধরনের পরামর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারি। এ ছাড়া ব্যয় কমাতে ও ঋণ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে ডিজিটালাইজেশনে গুরুত্ব দিতে হবে।
এ কে এম কামরুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।