বাস্তবের সঙ্গে মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান মেলানো খুব কঠিন
কাগজে–কলমে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে, একটা স্বস্তির জায়গা আছে, কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখছি না। সমাজের যারা নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষ, তাঁদের সঙ্গে কথা বললে মনে হয় না মূল্যস্ফীতির চাপ কমেছে। ফলে বাস্তবের সঙ্গে সরকারি পরিসংখ্যান মেলানো খুব কঠিন।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, মূল্যস্ফীতি হ্রাসের হারও খুব কম, মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এর প্রভাব খুব একটা অনুভূত হওয়ার কথা নয়। সাধারণভাবে মূল্যস্ফীতির হার বেশি। বাজারে চাল, আটা, চিনি, মাছ, মাংসের দাম অনেকটাই বেশি। শাকসবজির দাম কিছুটা কমেছে, তবে সেগুলো মানুষের খাদ্যতালিকার খুব বড় অংশ নয়। চাল, ডাল, মাছ, মাংসের দাম মানুষের জীবনে যতটা প্রভাব ফেলে, শাকসবজি অতটা ফেলে না।
নিকট ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি হ্রাসের বিষয়ে আশাবাদী হতে চাই। কিছু বিষয় বিশ্ববাজারের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ববাজারে দাম কমলে বা ডলারের বিনিময় হার কমলে কিছু পণ্যের দাম এমনিতেই কমবে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতি হ্রাস করার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেশে উৎপাদিত পণ্যের দাম কমাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
এ বছরের শুরুর দিকে আমরা সরকারি সংস্থা বিবিএসের মূল্যস্ফীতি পরিমাপের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। এ ছাড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য মূল্যস্ফীতির পৃথক হিসাব করার কথা বলেছি। আমরা বলেছি, মূল্যস্ফীতি হিসাবের পদ্ধতিতে যুগের বাস্তবতার প্রতিফলন হওয়া দরকার। আশা ছিল, বিবিএস আমাদের কথা আমলে নেবে। তবে আগামী বছর মূল্যস্ফীতির ভিত্তি বছর পরিবর্তন করা হবে বলে শোনা যাচ্ছে, তবে তা এখনো সমর্থিত নয়। মূল্যস্ফীতির ভিত্তি বছর ২০০৪-০৫ আর জিডিপির ভিত্তি বছর ২০১৫—এটা তো হতে পারে না। গত ১৭ বছরে মানুষের খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই বদলে গেছে। তা আমলে নিতে ভিত্তি বছর পরিবর্তন করার বিকল্প নেই।