জাতীয় এসএমই পুরস্কার পেলেন যে সাত উদ্যোক্তা

ছবি: পিআইডি

২০২৩ সালের জন্য জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার পেয়েছেন সাতজন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব উদ্যোক্তার হাতে আজ রোববার পুরস্কার তুলে দিয়েছেন।

সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় এসএমই পণ্যমেলা ২০২৪-এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই অনুষ্ঠানে সাত উদ্যোক্তার হাতে ক্রেস্ট, অ্যাক্রেডিটেশন সনদসহ জাতীয় এসএমই পুরস্কার ২০২৩ হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মাসুদুর রহমান প্রমুখ।

পুরস্কার পেলেন যাঁরা

২০২৩ সালে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্যে বর্ষসেরা নারী মাইক্রো উদ্যোক্তা হয়েছেন স্বপ্না রাণী সেন। মাত্র ৫০ হাজার টাকা পুঁজি আর দশজন দুস্থ নারীকে নিয়ে ২০১১ সালে শতরঞ্জি তৈরির প্রতিষ্ঠান ‘রংপুর ক্রাফট’ প্রতিষ্ঠা করেন স্বপ্না রাণী। এরপর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে স্বপ্না এগিয়ে গেছেন। বর্তমানে রংপুর, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে রংপুর ক্রাফটের তিনটি কারখানায় কাজ করছেন তিন শতাধিক কর্মী।

গত বছরের জন্য বর্ষসেরা পুরুষ ক্ষুদ্র মাইক্রো উদ্যোক্তা হয়েছেন ‘হাতবাক্সের’ স্বত্বাধিকারী মো. শাফাত কাদির। ঢাকার আহসান মঞ্জিল, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, কার্জন হল কিংবা সেন্ট মার্টিন—এ ধরনের দর্শনীয় বিভিন্ন স্থাপনা ও স্থানের ছোট্ট প্রতিরূপ বা রেপ্লিকা তৈরি করে শাফাত কাদিরের প্রতিষ্ঠান হাতবাক্স। মাত্র চার লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি এখন বছরে কোটি টাকার ওপর পণ্য বিক্রি করছে।

২০২৩ সালের জাতীয় বর্ষসেরা পুরুষ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হয়েছেন মো. ওয়ালিউল্লাহ ভূঁইয়া। দেশের প্রান্তিক স্কুলগুলোয় শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করছে ওয়ালিউল্লাহ ভূঁইয়ার প্রতিষ্ঠান ‘লাইট অব হোপ’। প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত তিন লাখের বেশি শিশুর সঙ্গে কাজ করেছে। তৈরি করেছে ৬২০টি স্কুল লাইব্রেরি।

অন্যদিকে বর্ষসেরা নারী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হয়েছেন লেদারিনা প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী তাসলিমা মিজি। চামড়াপণ্যের ব্যবসা করেন তাসলিমা মিজি। তাঁর ব্র্যান্ডের নাম ‘গুটিপা’। গুটিপার পণ্য দেশের বাজারের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

ছবি: পিআইডি

গত বছরের জন্য বর্ষসেরা পুরুষ মাঝারি উদ্যোক্তা হয়েছেন আশরাফ হোসেন। ২০১৪ সাল থেকে নিরাপদ খাদ্যপণ্য তৈরির কাজ করছে আশরাফ হোসেনের প্রতিষ্ঠান মাসুদ অ্যাগ্রো প্রসেসিং ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড। আশরাফ হোসেনের প্রতিষ্ঠানের তৈরি পণ্য বিদেশে রপ্তানিও হচ্ছে।

বর্ষসেরা মাঝারি নারী উদ্যোক্তা হয়েছেন সীমা সাহা। ছোটবেলা থেকে তাঁর স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবেন। তবে অর্থাভাবে সেই পথে যাওয়ার সুযোগ পাননি সীমা সাহা। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ১৯৯৭ সালে ঢাকার সাভারে প্রতিষ্ঠা করেন একটি প্রসূতিসেবা কেন্দ্র। পরবর্তী সময় প্রতিষ্ঠা করেন সীমা জেনারেল হাসপাতাল।

২০২৩ সালে স্টার্টআপ খাতে একটি জাতীয় এসএমই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। গত বছর বর্ষসেরা স্টার্টআপ পুরস্কার বিজয়ী হয়েছেন মদিনা আলী। তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘ডা. চাষি ইনকরপোরেশন’ দেশের কৃষি খাতে ডিজিটাল রূপান্তরে কাজ করছে। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা, কৃষকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, একটি সমন্বিত কৃষি ডেটাবেজ বা তথ্যভান্ডার তৈরির কাজ করছে ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটি।