এক্সিম ব্যাংক এবারও ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে

এক্সিম ব্যাংক

দেশের শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের মুনাফা কমেছে। গত বছর সব ধরনের খরচ বাদ দেওয়ার পর ব্যাংকটির কর-পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩৩৭ কোটি টাকায়। ২০২২ সালে এ মুনাফা ছিল ৩৭২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৩৫ কোটি টাকা বা প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ কমেছে।

প্রচলিত ধারার ব্যাংকের বেশ কয়েকটি যখন গত বছর রেকর্ড মুনাফা করেছে, সেখানে শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের মুনাফা কমার তথ্য পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার ব্যাংকটি মুনাফার এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এর আগে গত সোমবার এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি একই সভায় গত বছরের জন্য শেয়ারধারীদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পর্ষদ সভার এসব সিদ্ধান্তের কথা আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে ব্যাংকটি।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, মুনাফা কমলেও ব্যাংকটির লভ্যাংশ আগের বছরের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে। ২০২২ সালেও ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। লভ্যাংশ ঘোষণার খবরে আজ শেয়ারবাজারে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এদিন ডিএসইতে ব্যাংকটির প্রতিটি শেয়ারের দাম সোয়া ৩ শতাংশ বা ৩০ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৪০ পয়সায়।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত তিনটি ব্যাংক তাদের গত বছরের আয়-ব্যয় ও মুনাফার তথ্য প্রকাশ করেছে। এদের মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ছাড়া বাকি দুটি ব্যাংক হলো শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। এর মধ্যে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরেই লোকসানি ব্যাংক। তাই ব্যাংকটিকে আর মূলধারা শরিয়াহ ব্যাংকের বিবেচনায় নেওয়া হয় না। এর বাইরে শরিয়াহ ব্যাংকের মধ্যে শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংকের মুনাফা আগের বছরের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে। আর এক্সিম ব্যাংকের মুনাফা কমেছে।

ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইসলামী ব্যাংকসহ শরিয়াহভিত্তিক কয়েকটি ব্যাংকের অনিয়মের কারণে গত বছর ব্যাংক খাতে তারল্যসংকট দেখা দেয়। যার প্রভাব এ খাতের অন্যান্য ব্যাংকের ওপরও পড়েছে। এ ছাড়া প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলো গত বছর সরকারি ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ করে ভালো মুনাফা করেছে। কিন্তু শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এ ধরনের বিনিয়োগের সুবিধা ছিল না। এ কারণে প্রচলিত ধারার ব্যাংকের চেয়ে শরিয়াহ ব্যাংকগুলো গত বছর মুনাফায় পিছিয়ে পড়েছে।

মুনাফা কমে যাওয়ায় এক্সিম ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএসও কমে গেছে। গত বছর শেষে ব্যাংকটির ইপিএস কমে দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৩৩ পয়সা। ২০২২ সালে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ২ টাকা ৫৭ পয়সা।

এদিকে সম্প্রতি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে সংকটে থাকা পদ্মা ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য ব্যাংক দুটির মধ্যে সমঝোতা চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। পদ্মা ব্যাংককে একীভূত করলে তাতে এক্সিম ব্যাংকের মুনাফা বা আয়ে কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে কি না-এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন রয়েছে।