ট্রিলিয়ন ডলার কোম্পানির খাতায় নাম লিখিয়েছে আরেক মার্কিন প্রতিষ্ঠান

মার্কিন ডলারছবি: রয়টার্স

নতুন একটি ট্রিলিয়ন ডলার বা এক লাখ কোটি ডলারের কোম্পানির আবির্ভাব ঘটেছে। এটি ব্রডকম, যারা সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ তৈরি করে। গতকাল শুক্রবার এই কোম্পানিটির মূল্যমান এক ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে।

মার্কিন হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারী কোম্পানির একটি সহযোগী হিসেবে ব্রডকমের জন্ম হয়েছিল। ব্রডকম এখন ধারণা করছে, যে ধরনের চিপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই শিল্পে ব্যবহার করা হয়, তার চাহিদা বিপুলভাবে বাড়বে। এখনই বাজারে এ ধরনের চিপ হু হু করে বিক্রি হচ্ছে।

ব্রডকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হক ট্যান বলেন, ২০২৭ সাল নাগাদ কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা ৬ থেকে ৯ হাজার কোটি ডলারের আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। বর্তমানে এআইয়ের যে বাজার, ট্যান তার চেয়ে চার গুণ বড় বাজারের কথা বলছেন। তাঁর এই বক্তব্যের পরই ব্রডকমের শেয়ারের দাম ২১ শতাংশ বেড়ে যায়। বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রাক্কলনের চেয়ে বেশি আয় হবে বলেও কোম্পানিটি মনে করছে।

বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানি এখন এনভিডিয়ার বাইরে অন্য কোম্পানি থেকেও চিপ কিনতে চেষ্টা করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির জন্য যে ধরনের চিপ দরকার হয়, এনভিডিয়া সে ধরনের চিপ অত্যন্ত বেশি দামে বিক্রি করে। অন্যদিকে চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে হাত বাড়ালেই এসব চিপ কিনতে পাওয়া যায় না। এটাই ব্রডকমের জন্য সুবিধা বয়ে এনেছে। কোম্পানিটি এখন বড় ক্লাউড কোম্পানিগুলোর জন্য চাহিদামাফিক চিপ তৈরি করছে।

মাইক্রোসফট ও ফেসবুকের মালিক কোম্পানি মেটার মতো প্রতিষ্ঠান এখন বিশাল সব ডেটা সেন্টার তৈরি করছে। এসব ডেটা সেন্টারে যেসব কোম্পানি চিপ সরবরাহ করছে, বিনিয়োগকারীরা সেসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। এআই খাতে সরাসরি বিনিয়োগ করে শেষ পর্যন্ত কতটা মুনাফা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে এখনো উদ্বেগ রয়েছে।

ব্রডকমের সিইও হক ট্যান গত বৃহস্পতিবার জানান, তাঁরা বড় দুটি গ্রাহক পেয়েছেন। ২০২৪ সালে কোম্পানিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে থেকে ১ হাজার ২২০ কোটি ডলারের আয় পেয়েছিল। নতুন গ্রাহকের কাছ থেকে ব্রডকম ভালো ব্যবসা প্রত্যাশা করছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয় বাজারের আকার ১ হাজার ৫০০ কোটি থেকে ২ হাজার কোটি ডলার।

২০২৭ সাল নাগাদ ব্রডকম যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা–সংক্রান্ত বাজারের ৭০ শতাংশ অংশীদারত্ব নিতে পারে, তাহলে কোম্পানিটি পাঁচ হাজার কোটি ডলার আয় করতে পারে। তাদের ধারণা, ২০২৪ সালে এআই চিপের বাজারের ৭০ শতাংশ তাদের ছিল। কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই বাজারে এনভিডিয়াও চিপ বিক্রি করছে, সুতরাং বাজার অংশীদারত্ব ধরে রাখা কঠিন হতে পারে।

রোজেনব্লাট সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক হ্যান্স মোজেসম্যানের মতে, ২০২৭ সাল নাগাদ ব্রডকমের বাজার শেয়ার ২০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে হতে পারে।

চলতি বছরে ব্রডকমের শেয়ারের দাম ৬০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। অন্যদিকে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। সেই তুলনায় বড় ক্লাউড কোম্পানি অনেক পিছিয়ে আছে। যেমন মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ এবং অ্যালফাবেটের বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এই অ্যালফাবেটই হলো ব্রডকমের চিপের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।