আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা শুধু বাড়ছেই। গোষ্ঠীটির তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর হু হু করে পড়ছে। সেই সঙ্গে কমেছে বন্ডের দাম। এই পরিস্থিতিতে গোষ্ঠীটির বন্ডহোল্ডাররা আর্থিক উপদেষ্টা ও আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।
আলোচনার বিষয়বস্তু, আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ কী। তবে বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা মেটাতে আদানি গোষ্ঠী নিজেরাই নিরীক্ষা করাতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
বন্ডহোল্ডাররা জানতে চাইছেন, হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো, তাতে আদানি গোষ্ঠীর ঋণের কী পরিস্থিতি হবে।
বিষয়টি হলো, বন্ডহোল্ডাররা এই ভেবে শঙ্কিত যে আদানি গোষ্ঠী বাজারের আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করতে না পারলে তাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারদর কমার পাশাপাশি বন্ডের দরও গত ১২ দিনে কমেছে। আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেডের আগস্ট ২০২৭ বন্ডের দর ৭১ সেন্ট কমেছে। এ ছাড়া আদানি গ্রিন এনার্জি সেপ্টেম্বর ২০২৪-এর দর কমেছে ৬৪ সেন্ট। তবে এরপর কিছু গঠনমূলক পদক্ষেপের কারণে তা আবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। তবে গত বৃহস্পতিবার এই দুটি বন্ডের দায় আদানি গোষ্ঠী মেটাতে পেরেছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে আদানি গোষ্ঠীর মূল কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজেসের বন্ড ছেড়ে ১২ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার তোলার কথা ছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনা তারা স্থগিত করেছে।
গোল্ডম্যান স্যাকস অবশ্য বলেছে, আদানি গোষ্ঠীর যেসব বন্ড বাজারে আছে, সেগুলোর কারণে ভারতের অন্যান্য কোম্পানি আক্রান্ত হবে, এমন সম্ভাবনা কম।
নিরীক্ষা
এদিকে হিনডেনবার্গ প্রতিবেদনের জবাব দিতে নিজের ব্যবসার নিরীক্ষা করানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন গৌতম আদানি। এ কথা অবশ্য আদানি নিজে বলেননি। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে তেমন দাবি করেছে আদানি গোষ্ঠীর অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী সংস্থা টোটাল এনার্জিস (টিওটি)।
টিওটির দাবি, আদানি গোষ্ঠীর ব্যবসার নিরীক্ষা করার দায়িত্ব পেতে পারে ‘বিগ ফোর’ খ্যাত কোনো বহুজাতিক সংস্থা। যদিও ফ্রান্সের ওই কোম্পানির বিবৃতি প্রকাশের পরে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়নি আদানি গোষ্ঠী।
ঝড়ের নাম হিনডেনবার্গ
গত ২৫ জানুয়ারি হিনডেনবার্গ নামের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ছোট একটি বিনিয়োগ কোম্পানি এক প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদমূল্য প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। এই সময়ে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন কোম্পানির বাজার মূলধন ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি কমেছে।
হিনডেনবার্গের অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠী জালিয়াতি করে গত শেয়ারের দর কৃত্রিমভাবে বাড়িয়েছে। এই গোষ্ঠী কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দর বাড়িয়েছে। এভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।