বিপণিবিতান খুললেও বিক্রি কম, উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা

কারফিউ শিথিল থাকায় বেশির ভাগ বিপণিবিতান ও দোকান খুলেছে। তবে ক্রেতা ও বেচাবিক্রি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কম। গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর মিমি সুপার মার্কেটেছবি: জুয়েল শীল

কারফিউ জারির প্রথম চার দিন বন্ধ থাকার পর গত বুধবার থেকে রাজধানীর দোকানপাট ও বিপণিবিতান খুলতে শুরু করে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকার সময় এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি খুবই কম। ক্রেতা না থাকায় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বউনি পর্যন্ত করতে পারছে না। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

রাজধানীর কয়েকটি বিপণিবিতানের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, তিন দিন ধরে দিনের একটি লম্বা সময় কারফিউ শিথিল থাকলেও প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। সড়কে গণপরিবহনও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম। ফলে ক্রেতা উপস্থিতি ও বেচাবিক্রি দুটোই কম। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া পরিস্থিতির কারণে ১০–১২ দিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য হচ্ছে না। তাতে মাস শেষে অনেকের দোকানের ভাড়া ও কর্মীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতে হবে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে ১৫ জুলাই থেকে সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই, শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। শনি ও রোববার দুই ঘণ্টা, সোমবার তিন ঘণ্টা ও মঙ্গলবার চার ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়। ওই সময় নিত্যপণ্যের বাইরে অন্য দোকানপাট খোলেনি। বুধবার কারফিউ শিথিলের সময়সীমা বাড়ানো হলে সকাল থেকে সব ধরনের দোকান ও বিপণিবিতান খুলতে শুরু করে।

ঢাকার শপিং হাব হিসেবে পরিচিত নিউমার্কেট-গাউছিয়া এলাকার সব বিপণিবিতান খুলেছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এসব বিপণিবিতানের দোকানপাট খোলা থাকলেও ক্রেতা না থাকায় দোকানিরা অলস সময় পার করছেন বলে জানান এই এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী। 

এ বিষয়ে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ১২ জুলাই ভারী বর্ষণে নিউমার্কেটের অনেক ব্যবসায়ীর পণ্য পানিতে ভিজে নষ্ট হয়। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাননি ব্যবসায়ীরা। তারপর কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করলে কারফিউ জারি করা হয়। সব মিলিয়ে দুই সপ্তাহ ধরে কোনো ব্যবসা হচ্ছে না। মানুষের মধ্যে এখনো আতঙ্ক রয়েছে। তাই প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। সে জন্য ক্রেতাদের উপস্থিতি খুবই কম।  

চাঁদনীচক দোকান মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, বিক্রিবাট্টা একেবারে নেই। দোকানপাট খুলে প্রতিদিন লোকসান
দিতে হচ্ছে। দোকানের কর্মীদেরও কষ্ট করে কাজে আসতে হচ্ছে। 

অভিজাত বিপণিবিতানের ফ্যাশন হাউসেও ক্রেতার দেখা নেই। একপ্রকার নিয়ম রক্ষার মতো দোকানপাট খুলছেন অধিকাংশ দোকানি। টুকটাক বেচাবিক্রির তথ্য দিলেন হাতে গোনা দু-একজন ব্যবসায়ী। 

ফ্যাশন হাউস সাদাকালোর স্বত্বাধিকারী আজহারুল হক প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু পোশাক-আশাক নিত্যপণ্য নয়, সেহেতু বেচাবিক্রি খুবই কম। বিপণিবিতানে ক্রেতা খুব কম। মানুষের মধ্যে এখনো একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।