সদ্য সমাপ্ত ২০২২–২৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাতটি প্রকল্পে ৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এই বরাদ্দের এক টাকাও খরচ করতে পারেনি মন্ত্রণালয়টি। অর্থাৎ গত এক বছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নের খাতায় ফলাফল ছিল শূন্য।
শুধু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়; বেশ কিছু মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিস্থিতিও খারাপ। সারা বছরে সব মিলিয়ে চারটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের অর্ধেক কিংবা সিকি ভাগ অর্থও খরচ করতে পারেনি।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সাত প্রকল্পে ১০১ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। খরচ হয়েছে মাত্র ২৫ কোটি টাকা বা ২৫ শতাংশ। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাত প্রকল্পে ৪৩১ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে সারা বছরে খরচ হয়েছে মাত্র ১৭০ কোটি টাকা। বাস্তবায়নের হার মাত্র ৩৯ শতাংশ। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের তিন প্রকল্পে ৭৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। খরচ হয়েছে ৩৫১ কোটি টাকা, বাস্তবায়ন হার ৪৭ শতাংশ।
এই চার মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এডিপি বাস্তবায়ন হারই সবচেয়ে খারাপ। গতকাল বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) গত অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়নের চিত্রে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বিদায়ী অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার আগের চেয়ে কমে ৮৪ শতাংশে নেমেছে। এই অর্থবছরে সংশোধিত এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। যা এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরের ২ লাখ ৩ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকার চেয়ে ৪ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা কম। তখন এডিপির প্রায় ৯৩ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত সরকার কৃচ্ছ্র সাধনের নীতি গ্রহণ করায় বহু প্রকল্পে বরাদ্দ থাকলেও অর্থ ছাড় করা হয়নি। শুধু অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর অর্থই বেশি ছাড় করা হয়েছে। এতে এডিপি বাস্তবায়নের হার কমেছে।
গত অর্থবছরের এডিপিতে অবশ্য বরাদ্দের চেয়ে বেশি খরচের নজিরও আছে। তা করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়।
টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এই বিভাগ ২৪৫টি প্রকল্পের বিপরীতে খরচ করেছে ৩২ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। বিভাগটির এডিপি বাস্তবায়নের হার ৮২ শতাংশ। এ ছাড়া দ্বিতীয় স্থানে থাকা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ২৭ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা এবং তৃতীয় অবস্থানের বিদ্যুৎ বিভাগ ২৬ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা খরচ করেছে।