বন্ডে প্রবাসীদের বিনিয়োগ কমতে থাকায় শর্ত সহজ করেছে সরকার। এখন থেকে শুধু পাসপোর্ট দিয়েই ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট ডলার বন্ড কিনতে পারবেন প্রবাসীরা। অর্থ মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানিয়েছে। আগে এসব বন্ড কিনতে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল সোমবার ব্যাংকগুলোকে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট ডলার বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে পাসপোর্ট নম্বরকে পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক হবে না।
বিদেশে থেকেই বাংলাদেশিরা এসব ডলার বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। এ ছাড়া বন্ড বিক্রি করে মুনাফা বিদেশে নেওয়া যায়। এর মাধ্যমে দেশে বৈধপথে ডলার আসা উৎসাহিত করে সরকার।
আগে তিন বছর মেয়াদি ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের সব ক্ষেত্রে সুদহার ছিল ৬ শতাংশ। বর্তমান সুদহার এক লাখ টাকা পর্যন্ত ৫ শতাংশ, ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ৪ শতাংশ আর এর বেশি হলে ৩ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদি ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডে আগে সাড়ে ৭ শতাংশ সুদ পাওয়া যেত। এখন এক লাখ টাকা পর্যন্ত সাড়ে ৫ শতাংশ, পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত সাড়ে ৪ শতাংশ আর এর বেশি হলে সাড়ে ৩ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়।
গত এপ্রিল মাসে প্রবাসী বন্ডে সুদহার কমানোর পর বিনিয়োগসীমা কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়। এর প্রভাবে প্রবাসী বন্ডে বিনিয়োগ কমছে। গত জুলাই-আগস্ট সময়ে ৩৪ কোটি টাকার ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড বিক্রি হলেও আগে কেনা বন্ডের অর্থ পরিশোধ হয়েছে ১২১ কোটি টাকা। ফলে নিট বিক্রি কমেছে ৮৭ কোটি টাকা। তবে ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডের বিক্রি বেড়েছে ৩১ কোটি টাকার। প্রথম দুই মাসে ৪৭ কোটি টাকা নতুন বিক্রির বিপরীতে পরিশোধ হয়েছে ১৬ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলার–সংকটের মধ্যে বন্ডের আকর্ষণ বাড়াতে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার শর্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। কারণ, প্রবাসীদের কাছে এই বন্ড এখনো ভালো বিনিয়োগমাধ্যম। এতে যে সুদ পাওয়া যায়, তা এখনো অন্য দেশের চেয়ে বেশি।