বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু ও মুরগির দাম
কোরবানির ঈদ মৌসুমের মধ্যে এবার কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে ৩০০ টাকা ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু ও ব্রয়লার মুরগির দাম। আর দাম কমেছে মুরগির ডিম ও রসুনের। এ ছাড়া বেশির ভাগ সবজি ও মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ঈদের ছুটি শেষ হলেও নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে এখনো ভালোভাবে বেচাকেনা শুরু হয়নি। এর কারণ, ঈদে রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষের একটা অংশ এখনো ঢাকায় ফেরেনি। গতকাল রাজধানীর চারটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ দোকানই বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি ক্রেতার উপস্থিতিও ছিল অনেক কম।
পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের বন্ধের মধ্যে বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ কম। এ কারণে কাঁচা মরিচসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে দু-এক দিনের মধ্যে বাজারে পণ্য সরবরাহ আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে জানান তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও তালতলা, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, বাজারে সরবরাহ কম থাকায় কাঁচা মরিচের দাম অনেক বেড়ে গেছে। গতকাল বিভিন্ন বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগেও কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচে ১০০ টাকার বেশি দাম বেড়েছে।
কোরবানির ঈদের মৌসুমে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়া নতুন ঘটনা নয়। গত বছরেও ঈদের সময় হঠাৎ করে কাঁচা মরিচের দাম অনেক বেড়ে যায়; খুচরা বাজারে তখন প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের সময় বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকে। এ ছাড়া বৃষ্টিসহ বিভিন্ন কারণে সরবরাহ খরচ বেড়েছে। তাই মরিচের দাম বাড়তি।
রান্নাঘরের নিত্যদিনের পণ্য পেঁয়াজ ও আলুর দামও বেড়েছে। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজই বেশি বিক্রি হয়। ঈদের আগে পাইকারিতে ৭৫-৮০ টাকা কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল; তখন খুচরা পর্যায়ে দর ছিল ৯০ টাকা। তবে গতকাল পাইকারিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৮০-৮৫ টাকা। ফলে খুচরা পর্যায়েও পেঁয়াজের দাম পাঁচ টাকার মতো বাড়বে। যদিও গতকাল বিকেল পর্যন্ত খুচরা বাজারে সেভাবে নতুন দরের পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়নি।
আলুর ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যায়। ঈদের আগপর্যন্ত খুচরা বাজারে আলুর কেজি ছিল ৬০ টাকা। তবে গতকাল পাইকারিতে আলুর কেজিপ্রতি চার টাকা দাম বেড়েছে। তাতে দু-এক দিনের মধ্যে খুচরা পর্যায়ে আলুর কেজি ৬০ টাকা ছাড়াতে পারে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বাড়লে পেঁয়াজ, আলুর দাম কমবে।
ডিমে কমেছে, বেড়েছে মুরগির দাম
বাজারে ব্রয়লার মুরগির বাদামি ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১০ টাকা কমেছে। গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয় ১৫০ টাকা। তবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এখনো ঈদের আগের দাম, অর্থাৎ প্রতি ডজন ডিম ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
তবে ডিমের দাম কমলেও বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ঈদের আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৯০ টাকা বিক্রি হয়। গতকাল বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৯০-২১০ টাকা। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা কেজি।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে রসুনের দাম কমেছে, তবে বেড়েছে শসা ও টমেটোর দাম। দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের রসুনে কেজিতে ১০-২০ টাকা দাম কমেছে। আর শসা ও টমেটোর কেজিতে ২০-৪০ টাকা দাম বেড়েছে। অন্যান্য সবজি ও মাছের দাম মোটামুটি অপরিবর্তিত রয়েছে।