ভারত থেকে আলু আমদানি বাড়লেও দাম কমছে না, বরং বাড়ছে
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানি বেড়েছে। কিন্তু এর প্রভাব নেই বাজারে, বরং দাম বেড়েই চলেছে। ঈদের আগে স্থানীয় খুচরা বাজারে যেখানে প্রতি কেজি আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হতো, সেখানে এখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ, সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।
অন্যদিকে হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের বন্ধের আগের দিন ৮ এপ্রিল এই স্থলবন্দর দিয়ে ৪৭টি ট্রাকে করে ১ হাজার ১৯৮ টন আলু আমদানি হয়। পরে ঈদ ও বাংলা নববর্ষের ছুটি শেষে ১৫ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১৪১টি ট্রাকে করে আরও ৩ হাজার ৬৪৫ টন আলু আমদানি হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের আলু আমদানিকারকেরা বলেন, ভারত থেকে ডায়মন্ড জাতের আলু আমদানি হচ্ছে। এসব আলু দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। এর ফলে হিলিসহ আশপাশের পাইকারি ও খুচরা হাটবাজারগুলোয় আলুর দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে না। বরং বাজারে সরবরাহ কম থাকার কারণে আলুর দাম বেড়েই চলেছে। তাঁরা জানান, ঈদের আগে ভারত থেকে আমদানি করা হল্যান্ড ও ডায়মন্ড জাতের আলু হিলি স্থলবন্দরে ৩২ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি হয়েছে। তখন স্থানীয় খুচরা বাজারে আলু ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা দরে বিক্রি হয়। কিন্তু ঈদের পর ভারত থেকে নিয়মিতভাবে আলু আমদানি হলেও স্থলবন্দরে পাইকারিতে প্রতি কেজি আলুর দাম বেড়ে ৪০ থেকে ৪২ টাকায় ওঠে।
এদিকে আজ শনিবার দুপুরে দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকার পাইকারি সবজি বাজারে প্রতি কেজি স্টিক আলু ৪২ টাকা ও লাল পাটনাই জাতের আলু ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর পৌর শহরসহ অন্যান্য স্থানীয় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি স্টিক জাতের আলু ৪৫ টাকা, লাল পাটনাই জাতের আলু ৫০ টাকা ও ষাটাল জাতের আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বিরামপুর পৌর শহরের পুরাতন বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মানিক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের কাছে এখন আলু নেই বললেই চলে। কৃষকের অধিকাংশ আলু এলাকার মজুতদার ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে শহরের হিমাগারে মজুত করে রেখেছেন। দু-একজন কৃষকের কাছে আলু থাকলেও সেটির দাম এখন অনেক বেশি। আজ সকালে কেটরা গ্রামের এক কৃষকের কাছ থেকে স্টিক জাতের আলু ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ দরে কিনেছি।’
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি ও খান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী হারুন উর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্য থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ডায়মন্ড, হল্যান্ড ও কার্ডিনাল জাতের আলু আমদানি হচ্ছে। ভারত থেকে প্রতি কেজি আলু আমদানি করতে পরিবহন, আমদানি শুল্ক, অন্যান্য খরচসহ ৩৮ থেকে ৩৯ টাকা খরচ পড়ছে। এসব আলু ৪০ থেকে ৪২ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে বিভিন্ন দেশের আলু আমদানি বেড়ে যাওয়ায় এবং ভারতে বিরূপ আবহাওয়ায় আলু নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে তারা রপ্তানিমূল্য বাড়িয়েছে। তাই বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বেশি দামে আলু আমদানি করতে হচ্ছে। এর ফলে দেশের বাজারেও দাম বাড়ছে।