চাল আটা চিনি এখনো চড়া

বছরজুড়ে অস্থির ছিল নিত্যপণ্যের বাজার। বছর শেষেও সুখবর নেই। তাতে বাজার খরচের বাড়তি চাপ কমছে না।

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে কমানো হয়েছে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম। তাতে ভোজ্যতেলের বাজারে কিছুটা স্বস্তি তৈরি হয়েছে। তবে চাল, আটা ও চিনির বাজার এখনো চড়া। ক্রেতাদের বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে এসব পণ্য। বছরের শেষ সময়ে সবজি, মুরগি ও ডিমের মতো নিত্যপণ্যের দাম অবশ্য একটু কমতির দিকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার নিত্যপণ্যের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমন ধানের নতুন চাল বাজারে এলেও চালের দামে বড় কোনো প্রভাব পড়েনি।

আরও পড়ুন

দু-এক প্রকারের চালে এক-দুই টাকা কমলেও তা লম্বা সময় স্থায়ী হবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে আটা ও চিনির বাজারে নেই কোনো সুখবর। বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে এসব পণ্য।

সয়াবিনের দাম কমেছে, পাইকারিতে আটার দামও কমতে শুরু করেছে। বাজার পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
এস এম মুজিবুর রহমান, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বাজারদরের তথ্য বলছে, বাজারে এখন মোটা চাল স্বর্ণা ও চায়না ইরি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৫৫ টাকা। মাঝারি মানের চাল পাইজাম ও লতার দাম ৫২ থেকে ৬০ টাকা। সরু চাল মিনিকেট কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৭৮ টাকায়।

টিসিবির হিসাব অনুযায়ী, গত এক মাসের ব্যবধানে মোটা চালের মূল্য ২ শতাংশের ওপরে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরু চালের দাম বেড়েছে দেড় শতাংশ। অর্থাৎ বাজারে আমন ধানের নতুন চাল আসার পর দাম কমেনি, উল্টো বেড়েছে। তবে টিসিবির হিসাবে মাঝারি মানের চালে গত এক মাসে দাম বাড়েনি, কমেওনি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন করে বাজারে বিআর-২৮ চাল এসেছে। এরপরও এই চাল প্রতি কেজি ৬০ টাকার আশপাশে কিনতে হচ্ছে। উচ্চমানের নাজিরশাইল চাল মানভেদে পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি ৮৫ টাকার মধ্যে। তবে বাজারে এর চেয়ে আরও উচ্চমূল্যের চাল রয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানি প্যাকেটজাত যেসব চাল বিক্রি করে, তা প্রতি কেজি ১০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।

টিসিবি বলছে, চালের সঙ্গে বাজারে আটা ও চিনির দামও এখনো বাড়তি। প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে। প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৭০ থেকে ৭৫ টাকার মধ্যে। টিসিবির হিসাবে, গত এক মাসে খোলা আটার দাম ৬ শতাংশ ও প্যাকেটজাত আটার দাম ১৪ শতাংশ বেড়েছে।

আরও পড়ুন

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক এস এম মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সয়াবিনের দাম কমেছে, পাইকারিতে আটার দামও কমতে শুরু করেছে। বাজার পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।

এদিকে চিনির বাজারে সংকট এখনো কাটেনি। সরবরাহে এখনো ঘাটতি। খুচরায় প্রতি কেজি চিনি ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির হিসাবে চিনির দাম অবশ্য একটু কম। প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১১৫ টাকা।

কাঁটাবনের ভাই ভাই স্টোরের স্বত্বাধিকারী আমির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারে বড় কোনো সুখবর নেই। এখনো প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়তি।

বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো। তাতে দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে প্রায় সব ধরনের সবজি পাওয়া যাচ্ছে। মুরগির মাংস ও ডিমের দামও কমেছে।