গরুর মাংস ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি শুরু
বাজারে ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত প্রথম দিনেই কার্যকর হতে দেখা গেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত এক মাস ঢাকার ক্রেতারা এই দামে গরুর মাংস কিনতে পারবেন। তবে ক্রেতারা মাংস পছন্দ করে নিতে চাইলে দাম একটু বেশি দিতে হচ্ছে। অবশ্য বিক্রেতাদের একটি অংশের মধ্যে নতুন দাম কার্যকর করা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে। তাঁরা বলছেন, ভালো মানের গরুর মাংস বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করলে লোকসান হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পলাশী, নিউমার্কেট, হাতিরপুল ও কাঁঠালবাগান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই গরুর মাংস আগের মতো ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। তবে ৬০০ টাকার মাংসে হাড় ও চর্বির পরিমাণ বেশি দেওয়া হয়।
ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি বুধবার রাতে নতুন করে ৬৫০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গরুর মাংসের দাম কমার পরে মুরগির বেচাকেনা কমেছিল। কমেছিল দামও। তবে গতকাল বাজারে মুরগির দাম কোথাও কোথাও কিছুটা বাড়তি দেখা গেছে।
পলাশী বাজারের মাংস বিক্রেতা তপন মুনশি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি সম্ভব, সেটা অনেকে করে দেখাচ্ছেন। আজ (গতকাল) ৬৫০ টাকা কেজিতে একটা গরু বিক্রি করলাম। সমস্যা হচ্ছে, আমাদের এই বাজারের ক্রেতারা পছন্দমতো মাংস নিতে চান। সেভাবে দিতে গেলে পোষায় না। আমার এক গরুতে পাঁচ হাজার টাকা লোকসান হলো। এ জন্য দুপুরের পর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছি।’
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংসের দাম নির্ধারণের বিষয়টি পরীক্ষামূলকভাবে এক মাস চলবে। যেহেতু ব্যবসায়ীদের একাংশ হাড়-মাংস-চর্বি সবকিছু মিলিয়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি করছিল, তাতে অনেকে ব্যবসা করতে পারছিল না। এ জন্য দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এই দামে প্রতি কেজি গরুর মাংসে ৭৫০ গ্রাম মাংস, ২০০ গ্রাম হাড় ও ৫০ গ্রাম চর্বি থাকবে।
গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি সম্ভব, সেটা অনেকে করে দেখাচ্ছেন। আজ (গতকাল) ৬৫০ টাকা কেজিতে একটা গরু বিক্রি করলাম। সমস্যা হচ্ছে, আমাদের এই বাজারের ক্রেতারা পছন্দমতো মাংস নিতে চান।পলাশী বাজারের মাংস বিক্রেতা তপন মুনশি
ক্রেতা-ব্যবসায়ী উভয় পক্ষের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা প্রথম আলোকে বলেন, বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
এদিকে চাল, ডাল, চিনি, আটা, ময়দার মতো পণ্যের দামে বড় কোনো পরিবর্তন না এলেও দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে।
নিউমার্কেটের মুদি ব্যবসায়ী জলিল স্টোরের মালিক আবদুল জলিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে চাহিদা জানানোর পরও প্যাকেটজাত চিনি দিচ্ছে না কোম্পানিগুলো। খোলা চিনিই বিক্রি করছি। মাঝেমধ্যে প্যাকেটজাত চিনি এলেও মোড়কের গায়ের দামের চেয়ে বেশি দামে পাইকারিতে কিনতে হচ্ছে।’
গরুর মাংসের দাম কমার পরে মুরগির বেচাকেনা কমেছিল। কমেছিল দামও। তবে গতকাল বাজারে মুরগির দাম কোথাও কোথাও কিছুটা বাড়তি দেখা গেছে। সোনালি মুরগির কেজি আবার ৩০০ টাকার ওপরে উঠেছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি। ব্রয়লারের দাম গত সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা কম ছিল।