১০ টাকার বাড়ি দেখানো হচ্ছে ১ টাকা
৬ মাসে ১০ হাজার কোটি কালোটাকা সাদা হওয়ার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আমরা সাদা করতে চাই বলেই সাদা হলো। আমাদের বাজেটেই আছে। বাজেট বক্তব্যে বলেছি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো অ্যাড্রেস করতে চাই।’
আজ বুধবার অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সিঙ্গাপুর থেকে বৈঠকে অংশ নেন তিনি। চিকিৎসার জন্য গত নভেম্বর থেকেই অর্থমন্ত্রী সিঙ্গাপুরে রয়েছেন।
যত টাকায় বাড়ি বিক্রি হচ্ছে, তত দেখানো হচ্ছে না—এমন মন্তব্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়, দেখানো হচ্ছে ১ টাকা। যেসব জায়গায় হাত দেওয়া দরকার, সেসব জায়গায় হাত দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই এখন কালোটাকা সাদা হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশের মতো পুঁজিবাজারেও সুযোগটি রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) প্রণোদনা চালু করা হয়েছে, আর আবাসন খাতে স্ট্যাম্প মাশুল ও শুল্ক বাড়তি থাকার কারণে কোনো নিবন্ধন হচ্ছে না, সরকারও রাজস্ব পাচ্ছে না। ৬ মাসে যে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি কালোটাকা সাদা হয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলো এসেছে বলেই অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবাসী আয়ের অর্থও পুঁজিবাজারে আসবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একজনের একটা লেনদেন ১০ হাত ঘুরছে। এতে অর্থনীতি বেগবান হচ্ছে। আমাদের উদ্দেশ্য সফল। পুরোপুরি না হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সফল। আমরা চাই কালোটাকা সাদা হোক। কেন চাই, তার কারণ নিয়ে অনেকবার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেকে কর দেন, অনেকেই দেন না। করের হারও অনেক বেশি ছিল। আস্তে আস্তে এগুলো কমিয়ে আনতে না পারলে হবে না।
বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়, দেখানো হচ্ছে ১ টাকা। যেসব জায়গায় হাত দেওয়া দরকার, সেসব জায়গায় হাত দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই এখন কালোটাকা সাদা হচ্ছে।
ব্যাংকের সুদের হার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বেশি ছিল। এত বেশি সুদে শিল্পায়ন হয় না, কর্মসংস্থানও হয় না। আমরা এখানেও সফল। যা করে দিয়েছি, সবাই গ্রহণ করেছে। বিদেশে ব্যাংকে টাকা রাখলে উল্টো টাকা দিতে হয়। সেখানে কেউ লাভ পান না। যদি কেউ পানও, বড়জোর এক থেকে দেড় শতাংশ। অথচ আমাদের দেশে তা ৬ শতাংশ।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকলেও সরকার কর পাচ্ছে না। টিআইএন নম্বর দিয়ে কী হবে, যদি কর না পাওয়া যায়? সে কাজটি করার জন্যই আমরা পরিপূর্ণভাবে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় যাচ্ছি। যত দিন পর্যন্ত স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা শেষ করা যাবে না, তত দিন পর্যন্ত এ সমস্যা থাকবে।’
চাল আসবে আড়াই লাখ টন
এদিকে সরকারি মজুত বাড়াতে আড়াই লাখ টন চাল আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তা জানানো হয়। এর মধ্যে দেড় লাখ টন ভারত থেকে সরকারি পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে আমদানি করা হবে। আর এক লাখ টন চাল আমদানিতে দরপত্র আহ্বান করা হবে।
সরকারি গুদামে চালের মজুত ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫ লাখ ৩২ হাজার টন ছিল। গত রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয় শর্ত সাপেক্ষে ১০ আমদানিকারককে ১ লাখ ৫ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়। ২০১৯ সালের ১ জুলাই সরকারি খাদ্যগুদামে মজুত ছিল ১৬ লাখ ৭৪ হাজার টন।