সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব নাকচ
সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এখনই সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো যাবে না বলে ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
আজ বুধবার সচিবালয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিপণনকারী কোম্পানিগুলো সয়াবিন তেলের দাম আরও ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু আমরা বলেছি, সামনে রমজান মাস। তাই এখন সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো যাবে না।’
আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে আন্তমন্ত্রণালয় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশনের কর্মকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিপণনকারী কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব ছিল, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৮০ টাকা করার। কিন্তু বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এখনই দাম না বাড়ানোর সুপারিশ করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সভায় পেঁয়াজ, চিনির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে দুই ঘণ্টার আলোচনার বেশির ভাগ সময় আলোচনা হয়েছে ভোজ্যতেল নিয়ে। বিপণনকারী কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব ছিল, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৮০ টাকা করার। কিন্তু বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এখনই দাম না বাড়ানোর সুপারিশ করেন। সব পক্ষের আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়, রমজান সামনে রেখে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে সরকারের সায় দেওয়া ঠিক হবে না।
এ ছাড়া সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ৩১ মের পর বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করা যাবে না। প্যাকেটজাত তেল বিক্রি করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের পর খোলা পাম তেলও বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হবে। ডিসেম্বরের পর খোলা পাম তেলও বিক্রি করতে হবে প্যাকেটে।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুনেছি কোথাও কোথাও খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে। তবে বেঁধে দেওয়া সময়ের পর আর খোলা তেল বিক্রি করা যাবে না।’ তিনি বলেন, সরকারের চেয়ে বড় হাত কারও নেই। সব ব্যবসায়ী এ কাজ করছেন না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কাজটি করছেন। যেসব অসাধু ব্যবসায়ী ভোজ্যতেল মজুত করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হবে।
অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সক্ষমতা চার গুণ বাড়ানো হচ্ছে। রমজান মাসে এক কোটি মানুষকে দুই কোটি লিটার তেল দেওয়া হবে। এতে পাঁচ কোটি মানুষ উপকৃত হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে। বিশেষ করে, ভোজ্যতেলের দাম না বাড়ানোর কথা বলেছেন। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে যা প্রয়োজন সবকিছু করা হবে বলে ঘোষণা দেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসীম উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন।