চার মাসেই ইউনিকর্ন থেকে ডেকাকর্ন
আমেরিকার সানফ্রান্সিস্কোভিত্তিক ব্লক চেইন প্ল্যাটফর্ম আলকেমি ইউনিকর্ন হওয়ার মাত্র চার মাসের মধ্যেই ডেকাকর্নে পরিণত হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি সিরিজ সি-ওয়ানের আওতায় এই স্টার্টআপ নতুন ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। ভেঞ্চার বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান লাইটস্পিড ও সিলভার লেক এই বিনিয়োগে নেতৃত্ব দিয়েছে। এই বিনিয়োগর সময় স্টার্টআপটির মূল্যমান (ভ্যালুয়েশন) ঠিক হয়েছে ১০ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২০ কোটি ডলার।
কোনো স্টার্টআপের মূল্যমান ১০০ কোটি ডলারের বেশি হলে তা ইউনিকর্ন ও ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলারের বেশি হলে তা ডেকাকর্ন হিসেবে অভিহিত করা হয়। এর আগে অক্টোবর মাসে ৩৫০ কোটি ডলার মূল্যের ২৫০ মিলিয়ন (২৫ কোটি) ডলার বিনিয়োগ পেয়ে ইউনিকর্নে পরিণত হয়েছিল তারা।
আলকেমি হলো তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক বিকেন্দ্রীকৃত অ্যাপ্লিকেশনের বৃহদাকারের অবকাঠামো। কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত সিস্টেমের সাহায্যে ইলেকট্রনিক লেনদেনের সহজ সংস্করণ হলো ব্লক চেইন। আলকেমিকে অনেকেই ব্লক চেইনের ‘আমাজন ওয়েব সার্ভিস’ হিসেবে দেখছেন। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, আমাজন ওয়েব সার্ভিস যেমন ক্লাউড ব্যবহারকারীদের নানান সেবা এক জায়গায় জড়ো (হোস্টেড) করেছে, তেমনি আলকেমিও ব্লক চেইনের অনেক প্রয়োজনীয় সেবা তাদের প্ল্যাটফর্মে গড়ে তুলেছে। এতে নিজেদের অবকাঠামো তৈরি না করেই ব্লকচেইনের অ্যাপ্লিকেশন বানানো ও তার লেনদেন করা সম্ভব হচ্ছে। এডোবি, ওপেন সি, প্রেপার, সুশি, গ্রাফ প্রভৃতি আইটি কোম্পানি বর্তমানে তাদের সেবা ব্যবহার করছে।
এক ব্লকপোস্টে আলকেমির সহপ্রতিষ্ঠাতা নিকিল বিশ্বনাথন বলেছেন, ‘তাদের বিশ্বাস, তৃতীয় সংস্করণের ইন্টারনেট (ওয়েব ৩. ০) ও ব্লক চেইনের প্রথম ইনিংস মাত্র শুরু হয়েছে। তার ধারণা, এই বিনিয়োগের ফলে এই ইকোসিস্টেমের বিকাশ গতি পাবে।
২০১৭ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির দুই গ্র্যাজুয়েট নিকিল বিশ্বনাথন ও জোসেফ লাউ ব্লকচেইন অ্যাপ্লিকেশনের কাঠামো হিসেবে আলকেমি প্রতিষ্ঠা করেন। সে থেকে তারা এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৬৪ মিলিয়ন (৫৬ কোটি ৪০ লাখ) ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে।
জোসেফ বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা ও নিকিল প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করছেন। নিকিলের লিংকডইন প্রোফাইলে বলা হয়েছে, তাদের প্ল্যাটফর্মে এ পর্যন্ত ১৯৭টি দেশ থেকে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য, ২০২২ সালের প্রথম ৪০ দিনে বিশ্বব্যাপী ব্লকচেইন স্টার্টআপগুলো ২.৭ বিলিয়ন (২৭০ কোটি) ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে।