শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভা
ঈদের আগে এপ্রিলের অর্ধেক বেতন
কোনো প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের বকেয়া পাওনা থাকলে তা–ও ঈদের আগে পরিশোধ করতে হবে।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পসহ অন্য সব খাতের শ্রমিকেরা চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন পাবেন। চলতি মাসের অর্ধেক বেতন পেলেও গত মার্চের পুরো বেতন এবং ঈদের বোনাসের পুরোটাই ঈদের আগে পাবেন শ্রমিকেরা। গতকাল সোমবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত টিসিসির এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বকেয়া পরিশোধের পাশাপাশি আমরা ২০ রোজার মধ্যে চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন এবং ঈদের ছুটির আগে বোনাস দেওয়ার দাবি করেছিলাম।
সভা শেষে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাকশিল্পসহ রাষ্ট্রায়ত্ত, বেসরকারি, প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক সব খাতের শ্রমিকদের ঈদের বোনাস এবং চলতি মাসের অন্তত ১৫ দিনের তথা অর্ধেক মাসের বেতন মালিকেরা পরিশোধ করবেন। এ ছাড়া যদি কোনো কারখানার বেতন-ভাতা বকেয়া থাকে, সেগুলোও ঈদের ছুটির আগেই শ্রমিকদের পরিশোধ করবে মালিকপক্ষ।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩ মে ঈদ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি হলে ঈদের সরকারি ছুটি শুরু হবে ২ মে থেকে। তার আগে ১ মে–ও সরকারি ছুটি। আবার সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি মিলিয়ে ঈদের ছুটির আমেজ শুরু হবে ২৯ এপ্রিল থেকে। সেই হিসাবে চলতি মাসের মধ্যেই সব ধরনের শিল্পকারখানার শ্রমিকের বেতন–বোনাস চলতি মাসের মধ্যেই পরিশোধ করতে হবে।
সভা শেষে বেগম মন্নুজান সুফিয়ান আরও বলেন, শ্রমিকের ঈদের ছুটি সরকারি ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে দিতে হবে। তবে জরুরি রপ্তানির প্রয়োজনে শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ছুটি কমবেশি করতে পারবেন কারখানার মালিকেরা। তিনি বলেন, শ্রমঘন এলাকায় শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার সুবিধার্থে ছুটির দিনেও ব্যাংক খোলা রাখার বিষয়ে গভর্নরকে অনুরোধ করা হবে। শ্রমিকেরা যাতে ঈদের ছুটিতে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন, সে জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
সভায় শ্রমসচিব মো. এহছানে এলাহী, অতিরিক্ত সচিব জেবুন্নেছা করিম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দীন আহমেদ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সহসভাপতি সুস্মিতা আনিস, বিজিএমইএর সহসভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, জতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে শ্রমিকনেতা সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিল্প পুলিশের তথ্য অনুযায়ী এখনো প্রায় ৩০ শতাংশ পোশাক কারখানা গত মার্চের বেতন পরিশোধ করেনি। সেই বকেয়া পরিশোধের পাশাপাশি আমরা ২০ রোজার মধ্যে চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন এবং ঈদের ছুটির আগে বোনাস দেওয়ার দাবি করেছিলাম।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে এই শ্রমিকনেতা বলেন, ‘আশা করছি এবার বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে পোশাকশিল্পে বড় কোনো সমস্যা হবে না। কারণ, শিল্পে শ্রমিকের ঘাটতি আছে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সবাই শ্রমিকদের ধরে রাখতে বেতন-ভাতা সময়মতো পরিশোধ করবে।’