বাণিজ্য মেলা বাড়িয়ে দিয়েছে ওই এলাকার বাড়িভাড়া
বাণিজ্য মেলাকে কেন্দ্র করে বাসাভাড়া বেড়ে গেছে মেলার আশপাশের এলাকায়। মেলায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মীরা জানান, তাঁদের সাধারণ ভাড়ার কয়েক গুণ বেশি বাসাভাড়া গুনতে হচ্ছে। খাবারের দামও বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের।
এ বছর বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে শেরেবাংলা নগরের পুরোনো ঠিকানা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শন কেন্দ্রে। জানা গেছে, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মীরা থাকার জন্য আশপাশের গ্রাম এলাকার বিভিন্ন বাসা ভাড়া নিয়েছেন। এসব কর্মী ও স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, এতে সাধারণ সময়ের তুলনায় বাসাভাড়া বেড়েছে চার-পাঁচ গুণ।
মেলায় তাঁতপণ্য বিক্রির স্টল নিয়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে আসা নুরুল টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপক মো. আবদুর রহিম। মেলার আশপাশে পরিচিত মানুষের বাসা না থাকায়, তিনি কাছেই একটি বাসা ভাড়া নিয়েছেন। কিন্তু তাঁকে এ জন্য কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আবদুর রহিম বলেন, ‘আমিসহ তিন-চারজন থাকার জন্য এক ঘরের একটি টিনের বাসা ভাড়া নিয়েছি। সেখানে রান্নার ব্যবস্থা নেই। ওয়াশরুমও ভালো না। সাধারণ হিসাবে এই ঘরের ভাড়া দুই-তিন হাজারের বেশি হওয়া উচিত নয়। কিন্তু আমাকে দিতে হয়েছে ১০ হাজার টাকা। আমার পরে যাঁরা সেখানে অন্য বাসা ভাড়া নিয়েছেন, তাঁদের আরও বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।’
কাশ্মীর থেকে পণ্য নিয়ে আসা হেলাল হোসাইন যাতায়াতের সুবিধার্থে মেলার কাছেই একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়েছেন। চার রুমের ওই বাসার জন্য তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। অথচ আগে আগারগাঁওয়ে মেলার সময়েও তাঁকে এত টাকা বাসা ভাড়া দিতে হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় একটি দোকানে চা বিক্রি করেন স্থানীয় বাসিন্দা সোহরাব মিয়া। তিনি জানান, বাসার ভাড়া নেওয়ার চাহিদা বেশি থাকায় কাছাকাছি এলাকার বাড়িওয়ালারা বাসাভাড়া অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাড়তি টাকার আশায় অনেকে আবার নিজেদের ব্যবহার করা রুম খালি করে দিয়ে ভাড়া দিয়েছেন।
বাড়তি বাসাভাড়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বাড়িওয়ালারাও। তবে তাঁরা বলছেন, মেলা স্থানের কাছাকাছি হওয়ায় মেলায় অংশ নেওয়া লোকেরা স্বেচ্ছায় বেশি ভাড়া দিয়ে বাসা ভাড়া নিয়েছেন। কাঞ্চন এলাকার পার্শ্ববর্তী এক বাসার মালিক ফজলুল হক বলেন, ‘আমার তিন রুমের ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া এমনিতে আট হাজার টাকা। তবে এক কাশ্মীরি বিক্রেতা এ বাসা পছন্দ হওয়ায় ১২ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া নিয়েছেন।’
বেশি নেওয়া হচ্ছে খাবারের দামও। খাবারের বাড়তি দাম নিয়ে অভিযোগের কথা জানান অপর এক স্টলের বিক্রয়কর্মী মহসিন উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমরা তিনজন বিক্রয়কর্মী থাকার জন্য যে বাসা নিয়েছি, সেখানে রান্নার ব্যবস্থা নেই। মেলাস্থলের ক্যানটিনে খেয়ে পোষাবে না, তাই কাঞ্চন ব্রিজ বা পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে খাবার আনাই। কিন্তু সে খাবারের দামও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি নেওয়া হচ্ছে। খাবারের মানও খারাপ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মেলার পরিচালক ইপিবির সচিব ইফতেখার আহমেদ জানান, তিনি গণমাধ্যম থেকে অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়টি শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে মেলা কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই।