'মিড ডে মিল' বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমেছে
ফরিদপুরের কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘মিড ডে মিল’ কার্যক্রম চালু করার ছয় মাসের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকার বিত্তবানদের আর্থিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ ও তাদের বিদ্যালয়মুখী করার জন্য ২০১১ সালের অক্টোবরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মিড ডে মিল (বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবার) নামে একটি কার্যক্রম চালু করে। এলাকার বিত্তবান লোকদের স্বেচ্ছায় দেওয়া আর্থিক সহায়তায় এটি চালু করা হয়। ফরিদপুরের নয়টি উপজেলায় একটি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১১ সালের ১৪ অক্টোবর ফরিদপুর শহরের কমলাপুরে শেখ সাহাবুদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক এর উদ্বোধন করেন। প্রশাসনের উদ্যোগে ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিত্তবান কয়েকজন সদস্য ও স্থানীয় কয়েকজন ইটভাটামালিককে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পাঁচ মাসের মাথায় টাকা না পাওয়ায় এ কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়।
শেখ সাহাবুদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, মিড ডে মিলের মাধ্যমে শিশুদের কোনো দিন খিচুড়ি, কোনো দিন রুটি ও ডিম, পাউরুটি, কলা, শিঙাড়া, সমুচা খাওয়ানো হতো। ফলে ওই সময় উপস্থিতির হার ৯০ শতাংশ হয়েছিল। এ প্রকল্প বন্ধ হওয়ায় বর্তমানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
চরভদ্রাসন উপজেলার আ. মজিদখাঁর ডাঙ্গী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, বেশির ভাগ শিশু বাসি পান্তাভাত খেয়ে স্কুলে যায়। ছয় ঘণ্টা স্কুলে থাকতে হয়। এ জন্য টিফিনের সময় ক্ষুধার তাড়নায় অধিকাংশ শিশু স্কুল থেকে বাড়িতে চলে আসে।
স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোসলেম উদ্দিন খান বলেন, সরকার শিশুদের বিনা মূল্যে বই দিচ্ছে, উপবৃত্তির টাকা দিচ্ছে। এর সঙ্গে মিড ডে মিল কর্মসূচি চালু থাকলে শিক্ষার্থীরা স্কুলমুখী হবে। ঝরে পড়া কমে যাবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিবপদ দে বলেন, ‘মিড ডে মিল কার্যক্রমটি ভালো ছিল। এর সুফলও পেতে শুরু করছিলাম। কিন্তু আর্থিক সমস্যা হওয়ায় এ কার্যক্রম চালানো যায়নি।’