'আগুনের মধ্যে থাকতে পারছি না... আমাকে বাঁচাও'
‘আমার স্বামী বেঁচে আছে, ও বলেচে আমি আসব। আমার স্বামী আবার আসবি, আবার আসবি।...আবার কথা বলবি।’
ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন আশা খাতুন। তাঁর এই বিলাপে কাঁদছেন স্বজন ও আশপাশের মানুষজনও। তাঁকে সান্ত্বনা দিতে পারছেন না স্বজনেরা।
আশার স্বামী ইফতেখার হোসেন মিঠু গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার বনানীতে এফ আর টাওয়ারে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। ইফতেখার কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চরবানিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আবির নামে তাঁর চার বছরের এক ছেলে আছে। তিন বছর ধরে এফ আর টাওয়ারের ২২তম তলায় প্যাডেস্ক নামে একটি কুরিয়ার সার্ভিসের শাখায় প্যাকেজিংয়ের কাজ করতেন তিনি। আগুন লাগার আগে তিনি ভবনের একাদশ তলায় একটি কাজে গিয়েছিলেন।
আজ শুক্রবার ইফতেখারের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে সেখানে হাজারো মানুষ ভিড় করে। স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ। স্ত্রী আশা খাতুন বিলাপ করে বলেন, ‘দুপুরে একবার ফোনে কথা হয়েছিল। ও বলেছে “আগুনের মধ্যে থাকতে পারছি না, আমাকে বাঁচাও।” আমি কিছুই করতে পারিনি। আগুন চারিদিক ছড়ায় গেছে। আর কথা বলতে পারেনি...।’ এ কথা বলতে বলতেই অচেতন হয়ে পড়েন আশা।
ইফতেখারের বাবা ইসাহাক প্রামাণিক ও মা হাজেরা খাতুনের কান্না থামছে না। চার বছরের একমাত্র ছেলে আবির স্বজনদের কোলে থেকে এদিক-ওদিক চেয়ে ফিরছে। ইফতেখারের বোন ইতি খাতুন জানান, চার ভাইবোনের মধ্যে ইফতেখার সবার বড়। তিনিই সবাইকে দেখাশোনা করতেন।
জানাজা শেষে শুক্রবার বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে ইফতেখারের লাশ দাফন করা হয়েছে।