৩২তম বিসিএসের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ‘পূরণ না হওয়া’ এক হাজার ১২৫টি পদ ৩৩তম বিসিএসের মেধাতালিকা থেকে পূরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা শিথিল করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, ৩২তম বিসিএসে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় এক হাজার ১২৫টি পদ খালি রয়েছে। এসব পদ ৩৩তম বিসিএসের মেধা কোটার মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় পাঠানো হয় বলেও জানান সচিব। সরকারি কর্মকমিশনের বিধান অনুযায়ী, চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ নেওয়া হয় মেধা কোটা থেকে। ৫৫ শতাংশ নেওয়া হয় জেলা কোটা থেকে। এই ৫৫ শতাংশের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, উপজাতিদের জন্য পাঁচ শতাংশ ও জেলার নাগরিকদের জন্য ১০ শতাংশ বরাদ্দ রয়েছে।২০১০ সালের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূরণ না হলে তা খালি থাকবে। ৩২তম বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় ওই পদগুলো ৩৩তম বিসিএসের মেধা কোটা থেকে পূরণ করার জন্য গতকালের সভা অনুমোদন দেয়।
২০১০ সালে চিকিৎসক নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় ৫৮২টি পদ মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হয়েছিল বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, এ রকম পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি হয়েছে। ৩২তম বিসিএসের বিশেষ কোটায় (নারী, মুক্তিযোদ্ধা ও উপজাতি) যোগ্য প্রাথী পাওয়া যায়নি। যোগ্য প্রাথী না পাওয়ায় দুই হাজার ৮০৫টি পদ খালি ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় (কারিগরি ও পেশাগত) এক হাজার ১২৫টি খালি রয়েছে।
এ পদ পূরণ না করায় সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে বলে মন্ত্রিসভা এ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০১৩ সালের প্রথম ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন গতকাল উপস্থাপন করা হয়। গত চার বছর তিন মাসে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সন্তোষ প্রকাশ করেন।সচিব জানান, মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ পর্যন্ত যেসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে, এর প্রতিবেদন পেশ করা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৯৫টি বৈঠক করেছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছে এক হাজার ২৮০টি। এর মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে এক হাজার ১৮৪টি; যার হার ৯২ শতাংশ। এ সময় নীতি কর্মকৌশল অনুমোদন হয়েছে ৪০টি। চুক্তি অনুমোদন হয়েছে ১০৭টি। সংসদে আইন পাস হয়েছে ২১৫টি। বিগত সরকারের সময় ঠিক একই সময়ে ১০ অক্টোবর ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈঠক হয়েছে ১৮১টি। সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৬৪৭টি। এর মধ্যে বাস্তবায়ন করেছে ৫০২টি; যার হার ৭৭ দশমিক ৬ শতাংশ। নীতি কর্মকৌশল অনুমোদিত হয়েছে ২১টি। চুক্তি হয়েছে ৫৬টি আর আইন পাস হয় ১৩৭টি।এ ছাড়া সভায় ২ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি কায়রোতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ ইসলামি শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণ সম্পর্কে জানানো হয়।